আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কে শুরু হচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের শান্তি সংলাপ। মঙ্গলবার থেকে এই সংলাপ শুরু হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
সংবাদ সম্মেলনে পেসকভ বলেন, ‘রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্টে রজব তৈইয়ব এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে আমাদের প্রেসিডেন্টের। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তার দেশে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং আমাদের প্রেসিডেন্ট সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর ৫ম দিন, ১ মার্চ বেলারুশের গোমেল শহরে প্রথমবারের মতো শান্তি সংলাপ শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠকে বসেছেন উভয় দেশের প্রতিনিধিরা।
শান্তি সংলাপের সর্বশেষ ফলাফল সম্পর্কে বিশদ ভাবে কিছু বলতে চাননি পেসকভ; তবে স্বীকার করেছেন, বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বৈঠক সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত বলব না এবং বলতে পারবও না। এক্ষেত্রে উভয়পক্ষই গোপনীয়তার নীতি মেনে চলছে। কারণ আমরা মনে করছি, বৈঠকের আলোচনা প্রকাশ্যে চলে এলে আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
‘তবে এটুকু আমি বলতে পারি যে, (বৈঠক থেকে) এখন পর্যন্ত বড় কোনো অগ্রগতি আসেনি।’
এদিকে, গত কিছুদিন ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ রোববার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক থেকে কাঙ্ক্ষিত কোনো ফলাফল আসবে না।
সার্বিয়ার সংবদমাধ্যমগুলোকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ এ সম্পর্কে আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে যদি দুই দেশের প্রেসিডেন্ট বৈঠকে বসেন, সেক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত কোনো ফলাফল আসবে না।’
‘তবে হ্যাঁ, দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক অবশ্যই হবে এবং যত দ্রুত আমরা মূল ইস্যুসমূহ সমাধান করতে পারব, ততই সেই বৈঠকের সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়বে।’
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে। ২০০৮ সালে ইউক্রেনে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়।
ন্যাটো ইউক্রেনেকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও সম্প্রতি ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বাড়ে তিক্ততা। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করার জন্য ইউক্রেনকে নানাভাবে আহ্বান ও চাপ দিয়েছে রাশিয়া, কিন্তু ইউক্রেন তাতে কর্ণপাত করেনি।
অবশেষে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার দু’দিন পর, ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করতে রুশ সেনাদের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সোমবার ৩২ তম দিনে পৌঁছেছে রুশ সামরিক বাহিনীর অভিযান, গত ২৬ মার্চ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ’স মেইন অপারেশনস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান সের্গেই রুডস্কয় এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানের মূল লক্ষ্য দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (ডনবাস অঞ্চল) স্বাধীন করা এবং ইতোমধ্যে অভিযানের প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেছে রুশ বাহিনী।
সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।