সাইফুল ইসলাম , মানিকগঞ্জ : প্রখর রোদ ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানিকগঞ্জের জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরেই বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের প্রখরতার পাশাপাশি দাবদাহে হাঁপিয়ে উঠেছে এখানকার জনজীবন। সাথে যুক্ত হয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।
মানিকগঞ্জের আরিচা আঞ্চলিক আবহওয়া অফিসের কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল শনিবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আজ রবিবার সকাল নয়টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর দুপুর তিনটায় তাপমাত্রা বেড়ে হয় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে প্রচণ্ড গরমে রাস্তাঘাট ও খেলার মাঠ ফাঁকা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
গরমের কারণে জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা গরমজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভর্তি হওয়া এসব রোগীর অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। গরমের তীব্রতায় শারীরিক অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি, ডাবের পানি ও স্যালাইন কিংবা লেবুর শরবত পান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, এই তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে হলে বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করা উচিৎ। একই সাথে সুতির পাতলা পোশাক পরিধান করতে হবে। প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি, লেবুর শরবৎ ও তরল খাবার খেতে হবে। কোনভাবেই বাইরের খোলা খাবার খাওয়া যাবেনা। বাইরের খোলা শরবৎ ও হোটেলের খোলা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
অপরদিকে, জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ রাস্তার মোড়ে মোড়ে বেসিন ব্লক নির্মাণ করা হলেও সেগুলোর অধিকাংশই বিকল হয়ে পড়েছে। এসব বেসিন ব্লক রক্ষণাবেক্ষণে তদারকি নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃৃপক্ষের। ফলে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।
রবিবার দুপুরে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জেলা সদর হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, দুটি প্রতিষ্ঠানের সামনে নির্মিত বেসিন ব্লক অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সামনের বেসিন ব্লকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী এক শিশু পানি পান করতে গিয়ে পানি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। এছাড়া, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের গেটে নির্মিত আরেকটি বেসিন ব্লক দখল করে গড়ে উঠেছে পান-সিগারেটের দোকান। বেসিন ব্লকের ওপর সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন ব্রান্ডের বোতলের পানি।
বিষয়টি নিয়ে মানিকগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী ফতেমা ফেরদৌসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালসহ জেলাজুড়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট অফিসকে নির্দেশনা দেয়া হবে। গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে ও গরমে করণীয় সম্পর্কে সিভিল সার্জনের সাথে আলাপ করে একটি আলোচনা সভাও করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।