জুমবাংলা ডেস্ক : দৈত্যাকৃতির পাঙাশ মাছ। যার একেকটির ওজন ১২০ থেকে ১৬০ কেজি। মাছগুলো জলকেলি করছে পুকুরে। অবাক বিস্ময়ের হলেও এই লংকাকাণ্ড ঘটিয়েছে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতের এই পাঙাশের নাম ‘মেকং জায়ান্ট ক্যাটফিস’।
মহাবিপন্নের তালিকায় থাকা মেকং নদীর এই মাছটি ৩০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। একটি দুটি নয় বর্তমানে বিএফআরআইয়ের গবেষণা পুকুরে রয়েছে রূপালী ধূসর রঙের বৃহৎদাকার অর্ধশত মেকং জায়ান্ট পাঙাশ। এই পাঙাশ নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এর প্রজনন সফলতা অর্জিত হলে দেশে পাঙাশ উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে।
বিএফআরআই সূত্রে জানা যায়, মাছটির প্রাকৃতিক আবাসস্থল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মেকং নদী অববাহিকায়। এই মাছটি ২০০৫ সালে বিশ্বের অন্যতম স্বাদুপানির বৃহত্তম মাছের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অর্জন করে। অতিরিক্ত আহরণ এবং বাসস্থানের ক্ষতির কারণে বর্তমানে এটি তার জন্মস্থানে বিপন্ন প্রায়। বিএফআরআইয়ের গবেষণা পুকুরে থাকা মাছগুলো থেকে প্রজনন করে এই মাছের বংশ বিস্তারের চেষ্টা করছেন গবেষকরা। বর্তমানে পাঙাশের উৎপাদন সাড়ে ৪ লাখ টন। তবে এই মাছ থেকে পোনা মিললে মাছে নতুন বিপ্লবের সূচনা হবে।
বিএফআরআইয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রিজভী আহমেদ বলেন, মেকং জায়ান্ট পাঙাশ মহাবিপন্ন তালিকায় থাকা একটি মাছ। যার সংরক্ষণ ও প্রজনন শুধু দেশের জন্য নয় সারা বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই মাছের জীবনকাল ১৭ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত।
ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আসফ উদ দৌলাহ বলেন, পাঙাশ মাছের এই প্রজাতিটির চোয়াল ও দাঁত নেই। এটি তৃণভোজী কিন্তু রাক্ষুসী নয়। ১০ মিটারের বেশি গভীরতার জলাশয় এদের বসবাসের আদর্শ জায়গা। মাছটি পানির নিচে পাথর কিংবা নুড়ি স্তরে থাকতে পছন্দ করে। একটি পরিপক্ক মা মাছ থেকে প্রজননকালে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ লাখ ডিম পাওয়া যায়। আগামী ২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মাছটির প্রজনন সম্ভব হবে।
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন সম্ভব হলে, এই পোনা মাত্র ১ বছরে ৯ থেকে ১২ কেজি ওজনের হয়। যা দেশি পাঙাশের তুলনায় ৬ গুণ বেশি বাড়ে বলেও জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আসফ উদ দৌলাহ।
বিএফআরআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. খলিলুর রহমান বলেন, মেকং জায়ান্ট পাঙাশ মেকং নদীর একটা মাছ। মেকং নদীর চীন, লাউস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম হয়ে এটা ইয়োলো সাগরে পড়েছে। সেই নদী থেকে ২০০৬ সালে এই মাছটি নিয়ে এসেছিলেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার রেনি ফিসারিজের কর্ণধার রেজা আলী। তিনি ২০১৫ সালে আমাকে ৫০টি মাছ দিয়েছিলেন। বর্তমানে এই মাছগুলোর একেকটির ওজন ১২০ থেকে ১৬০ কেজি। যার সর্বোচ্চ ওজন হতে পারে ৩০০ কেজি পর্যন্ত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।