আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিন্ধুর উপনদী ঝিলামের পানি পূর্বঘোষণা ছাড়াই ছেড়ে দিয়েছে ভারত। এতে করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ মাঝারি ধরনের বন্যার কবলে পড়েছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঝিলাম নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছাড়ছে ভারত। এতে করে সেখানে হঠাৎ করে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
বিবৃতিতে মুজাফফরবাদ প্রশাসনের মুখপাত্র বলেছেন, ঝিলাম নদীতে ভারত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি ছাড়ায় মাঝারি বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দুনিয়া নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে অবহিত না করেই শনিবার নদীর পানি বেশি পরিমাণে ছাড়তে শুরু করে ভারত। এরপর হু হু করে পানি বেড়ে যায় ঝিলাম নদীর।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ থেকে পাকিস্তানের চাকোঠি দিয়ে প্রবেশ করছে এই পানি। বন্যার বিষয়ে সতর্ক করতে মসজিদ থেকে স্থানীয়দের মাইকিং করতে শোনা গেছে। এতে করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে নদীতীরের মানুষের মধ্যে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে থাকা সিন্ধু নদের একটি উপনদী হলো ঝিলাম। ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে সৃষ্ট উত্তেজনার মুখে এরই মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত করেছে নয়াদিল্লি; হুমকি দিয়েছে পাকিস্তানকে সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে পাকিস্তান বলেছে, সিন্ধুর প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা করা হলে এটিকে তারা যুদ্ধের কর্মকান্ড হিসেবে বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ীই সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের পক্ষ থেকে।
সিন্ধু নদের পানি নিয়ে ভারতকে আরও ভয়ানক হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেছেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদ পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত।
যদিও এ মুহূর্তে সিন্ধু নদের পানি প্রবাহ আটকানোর মতো অবকাঠামো ভারতের নেই। তবে পানির প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জলশক্তিমন্ত্রী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে একটি রোপম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। বৈঠকে তিনটি অপশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সরকার স্বল্পকালীন, মধ্যকালীন এবং দীর্ঘকালীন ব্যবস্থার ওপর কাজ করছে যেন পাকিস্তানে এক ফোঁটা পানিও না যায়। শিগগিরই নদীর প্রবাহ বন্ধ করতে ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন হবে এবং প্রবাহ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.