জুমবাংলা ডেস্ক : স্বল্প খরচে সাধারণ মানুষের কাছে বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানির ফিল্টার পৌঁছে দিচ্ছে হবিগঞ্জের মাধবপুরের ২০টি কারখানা। বালু, ধানের তুষ ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি এসব ফিল্টারের দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে; তাই এর চাহিদাও অনেক। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের বাইরেও রফতানি সম্ভব বলে মনে করেন কারখানার মালিকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মানুষের সুস্থতার জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু বর্তমানে বিশুদ্ধ পানির উৎসগুলোতেও আর্সেনিকসহ নানা ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ও পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে পানির ফিল্টার এখন ঘরে ঘরে। অল্প টাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব পানির ফিল্টার। আর স্বল্প খরচে সাধারণ মানুষের কাছে এ বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার পৌঁছে দিচ্ছে হবিগঞ্জের মাধবপুরে গড়ে ওঠা ২০টি প্রতিষ্ঠান। দামে কম এসব ফিল্টারে বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি পাওয়া যায়। এসব ফিল্টার দেশ ছাড়িয়ে ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ পাশের দেশগুলোতেও যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাধবপুর পৌরসভার কাঁচারীপাড়া ও মালাকারপাড়ার অন্তত ২০টি পরিবারের সদস্যরা বংশানুক্রমে ফিল্টার তৈরির আদি পেশা এখনও ধরে রেখেছেন। বালু, ধানের তুষ ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি এসব ফিল্টারের দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। তবে বর্তমানে ফিল্টারের গায়ে টাইলস ব্যবহার করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছেন কারিগররা। এসব ফিল্টারের দাম একটু বেশি পড়ে। ফিল্টার তৈরিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পাঁচ থেকে আটজন কারিগরকে হাত লাগাতে হয়। ফিল্টার তৈরির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ফিল্টারের ফর্মা তৈরি, মোজাইক ও কার্বন (ফিল্টারের প্রধান ছাকনি) তৈরি করা। এ ছাড়াও ছোটোখাটো আরও কিছু কাজ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ছয় যুগের বেশি সময় ধরে সুনামের সঙ্গে চলছে হবিগঞ্জের মাধবপুরের বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার শিল্প। অল্প টাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য তৈরি হচ্ছে এ পরিবেশবান্ধব পানির ফিল্টার। কিন্তু বাজারে আধুনিক মানের ফিল্টার কেনার আর্থিক সঙ্গতি নেই অনেকেরই। মূলত এ শ্রেণির মানুষের কথা চিন্তা করেই তৈরি হচ্ছে মাধবপুরের ফিল্টার। এছাড়া দেশীয় প্রযুক্তিতে হাতে তৈরি এ ফিল্টারের পানি যেমন বিশুদ্ধ, তেমনি শীতল। তাই মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারেও ব্যবহার হচ্ছে এ ফিল্টার।
প্রথম প্রতিষ্ঠাতা হীরা লাল রায়ের নাতি পরিতোষ রায় জানান, ফিল্টার তৈরির এ পেশায় আগের মতো আর লাভ নেই। অনেকটা বাপ-দাদার পেশা রক্ষার্থে এটা করছেন। এসব ফিল্টার দামে সস্তা হলেও, এর ছাকনি প্রক্রিয়াটি উন্নতমানের। ফলে আয়রন ও আর্সেনিকমুক্ত শতভাগ বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব হয়। তাই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বড় পরিসরে কারখানা করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব।
জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ জানান, এ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে রফতানির ব্যবস্থা করতে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।
১৯৪৭ সালে হীরা লাল রায় নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী প্রথম এ ফিল্টার তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ফিল্টার কারখানা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।