মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাসের ফেসবুকে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে যখন সমালোচনা হচ্ছে তখনই তাঁর পোস্ট শেয়ার করলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। অন্যদিকে পূর্ণিমা দাসের এই পোস্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আরেক অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। তিশা পোস্ট শেয়ার করে সমালোচনার কবলে পড়েছেন।
স্কুলের আগুনে পুড়ে যাওয়া হায়দার আলী ভবনের শিক্ষকা পূর্ণিমা দাস।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এই শিক্ষিকা নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ভুল তথ্য ছড়াবেন না।’ সেই সঙ্গে লাশ গুমের বিষয়টি গুজব উল্লেখ করে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। পূর্ণিমা দাসের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। বরং বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তিনি।
অভিনেত্রীর মতে, পূর্ণিমা দাসের স্ট্যাটাসটি ঘটনার সঙ্গে মিলছে না। বরং সন্দেহের সৃষ্টি করছে।
পূর্ণিয়া দাস তাঁর পোস্টে বলছেন, আমি মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের একজন শিক্ষিকা। আপনাদের দুইহাত জোর করে বলছি, ভুল তথ্য ছড়াবেন না।
আমিও আগুনের মধ্যে আটকা পড়েছিলাম আমার চেয়ে বেশি আপনারা ফেসবুকবাসী জানবেন না তাই না? স্কুল ছুটি হয় দুপুর ১টায়, আমি ঠিক তার এক থেকে দুই মিনিটে স্কাই সেকশনে ঢুকে দেখি ওখানে শুধু একটা বাচ্চা দাঁড়ানো। কেউ ছিলো না সবাই চলে গিয়েছিল। আপনারা জানেন না ছুটির সময় হলে বাচ্চারা তিন চার মিনিট আগে থেকেই কিভাবে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বাসায় যাওয়ার জন্য এবং আমি চলে আসার পর অভিভাবক আসেনি বলে আবার স্কাই এ কিছু বাচ্চা ঢুকেছিল তাদেরকেও আমাদের আরেকজন টিচার ক্লাস থেকে নিয়ে অন্য সেকশনে বসায়।
এর পরেও আবার কয়েকজন (৫ -৬ জন) ঢুকেছিল তাদেরকেই আমরা হারিয়ে ফেলেছি। বা যারা করিডোরে, দোলনায় খেলছিল বা সিঁড়িঘরে ছোটাছুটি করছিল।
বা ওই মুহূর্তে ওই জায়গায় কাকতালীয় ভাবে ছিল। (এদের সংখ্যা অনিশ্চিত)
এরপর আসেন #cloud এ ওখানে বাচ্চার সংখ্যা (৮-১০) স্কাই এর চেয়ে বেশি ছিল। আমার ধারণা মাহরীন মিস, মাসুকা মিস ও মাহ্ফুজা মিস ওখান থেকেই বাচ্চাদের বের করার চেষ্টা করছিল। এবং তাদের বের করতে করতে নিজেরা ঝলসে যায়। যারমধ্যে মাহরীন মিস এবং মাসুকা মিসকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। মাহফুজা মিসের অবস্থা এখন গুরুতর উনি লাইফ সাপোর্টে আছেন। উনার জন্য আপনারা দোয়া করবেন। cloud এর পাশের রুম #mayna এখানে কিছু বাচ্চা ইনজিউরড্ কেউ মারা যায়নি।
mayna এর পাশে #doyel এই ক্লাসের একটা বাচ্চা আর নেই। doyel এর পাশে #tuberose এবং #waterlily এখানেও সবাই সেফ আছে। দ্বিতীয় তলার বাচ্চারদের ও ঘটনা একই। দুইটা ক্লাসরুম একটা টিচার্স রুম পুড়েছে। ওখানেও ১৫-২০ জন ছিল।
তিশা এই পোস্ট শেয়ার করে তীব্র সমালোচনার কবলে পড়েছেন। নেটিজেনরা তাকে কটু ভাষায় আক্রমণও করছেন। রশমা ধর নামের একজন লিখেছেন, আপু আপনি আমার খুব প্রিয় একজন অভিনেত্রী কিন্তু আজকে আমার মন খারাপ করে দিলেন। কোনো ক্লাসেই যদি তেমন কোনো ক্ষতি না হয়ে থাকে তবে যে ভিডিও ভাইরাল হলো এক ক্লাসরুমের ওগুলা কী? এখানে দেওয়া যাচ্ছে না ভিডিও বা স্ক্রিনশট নাইলে দেখাতাম, কাউকে ভয় না পেলেও সৃষ্টিকর্তা কে তো ভয় পান।
সুমন নামের আরেকজন লিখেছেন, ক্লাসে যদি বাচ্চারা নাই থাকবে তাহলে মেহেরিন ম্যাম কোন বাচ্চাদের ক্লাস থেকে বের করতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলেন।
অন্যদিকে, অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান বলছেন, পূর্ণিমা দাসের স্ট্যাটাসটি তাকে খুব বিরক্ত করছে। কেন করছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে সাদিয়া আয়মান লেখেন, “যেখানে স্কুলের হেড পিয়ন নিজেই বলেছে, স্কুল ছুটি হয় ১.৩০ এ, এমনকি অনেক স্টুডেন্টও একই কথা বলেছে।
পূর্ণিমা দাসকে উদ্দেশ্য করে সাদিয়া আয়মান আরো লেখেন, “আপনি লিখেছেন ‘sky’ সেকশনে একটা বাচ্চা দাঁড়ানো ছিল! সিরিয়াসলি? জুনায়েত থেকে শুরু করে রাইসা মনিসহ অনেক বাচ্চা মারা গেছে যারা স্কাই সেকশনে ছিল। ক্লাসের মধ্যে এতোগুলো বই খাতা, স্কুল ব্যাগ কোত্থেকে আসল? নিশ্চয়ই বলবেন না ‘স্টুডেন্টরা ক্লাসে বই খাতা ব্যাগ রেখে বাসায় চলে যায়, এটাই আপনাদের নিয়ম।’ ”
পূর্ণিমার কথার সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা মিলছে না জানিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, ‘ম্যাডাম, আপনার একার কথার সঙ্গে, এতোগুলো নিরীহ শিক্ষার্থী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কথার কোনো মিল নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।