জুমবাংলা ডেস্ক : দুর্নীতি মামলার আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের পদে থাকতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, দুর্নীতি মামলার আসামি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতো আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। পুতুলের বিরুদ্ধে গত ১২ জানুয়ারি একটি দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারসহ বিস্তারিত নথিপত্র চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক বানাতে অনৈতিকভাবে ক্ষমতার ব্যবহার করেছেন। এ অভিযোগের প্রাথমিক তথ্য যাচাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। যা চলমান। অনুসন্ধান টিম এ বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে যা যা প্রয়োজনে করতে পারবে।
দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুর্নীতির যেকোনো মামলা হলে আসামির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠানো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় দুদক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পুতুলের আসামি হওয়ার বিষয়টি অবগত করেছে। যেহেতু সে দুদকের মামলার আসামি, তাই স্বাভাবিকভাবে তিনি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন বলে মনে করি।
নানাবিধ দুর্নীতির মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ পান পুতুল। এমন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয় গত ১৬ জানুয়ারি।
গত ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে পুতুল এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় মামলা দায়ের করে দুদক। শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজের ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দের অভিযোগ ছিল।
এসব অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গৃহায়ন ও রাজউকের কর্মকর্তাসহ মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা এবং গৃহায়ন ও রাজউকের কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আর গত ১৩ জানুয়ারি একই অভিযোগে শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়। প্রতিটি মামলায় ১২ থেকে ১৩ জন রাজউক ও গৃহায়ণের কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
চাকরির সাক্ষাৎকারে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ‘নিজের সম্পর্কে’ যেভাবে বলবেন
শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ দুদক থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা গত ২৭ ডিসেম্বর জানানো হয়েছিল। দেড় দশক দেশ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel