কাতারে চালু হলো নান্দনিক ইসলামী জাদুঘর

ইসলামী জাদুঘর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হচ্ছে ফুটবলের সর্বৃহৎ আসর ফিফা বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশ কাতারে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বেশকিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। সেগুলোর একটি হলো- ইসলামী শিল্পকলা জাদুঘর চালু করা।

ইসলামী জাদুঘর

মঙ্গলবার দোহায় অবস্থিত ‘দ্য মিউজিয়াম অব ইসলামিক আর্ট’ নামে ওই জাদুঘরটি দেড় বছর পর ফের চালু করেছে কাতার। গত এক বছরের বেশি সময় এটি বন্ধ ছিল। গত বছরের মে মাসে অভ্যন্তরীণ সংস্কার কাজের জন্য এটি বন্ধ রাখা হয়।

আলজাজিরা জানিয়েছে, কাতার বিশ্বকাপ উপলক্ষে আরব বিশ্বের শোকেস হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবে মধ্যপ্রাচ্যের আকর্ষণীয় ও সর্বাধুনিক এই জাদুঘরটি।

সংস্কারের পর তাতে ১৮টি অত্যাধুনিক গ্যালারিতে ইসলামের ইতিহাস, সংস্কৃতিক ও শিল্পকলা সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহিম, মিউজিয়ামের চেয়ারম্যান শাইখা আল-মায়াসা বিন খালিফা আল-সানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ববর্গ।

জাদুঘরটির পরিচালক জুলিয়া গোনিলা বলেন, ‘এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ইসলামী শিল্পকলা জাদুঘর। তা আরববিশ্বের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এ জাদুঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। এখানে বিশ্বের নানা স্থান থেকে সংগৃহীত ১৪ শ’ শতাব্দীর ইসলামী শিল্প ও প্রত্নতত্ত্ব প্রদর্শনী রয়েছে। ’

‘আগে এটি শুধুমাত্র শিল্পকলাকেন্দ্রীক জাদুঘর ছিল। এখন তাতে সংস্কৃতি অংশ যুক্ত হয়েছে। আমরা চাই, এসব দুর্লভ দুর্দান্ত বস্তুগুলোর পেছনের গল্পগুলো দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরতে।’ যোগ করেন গোনিলা।

দোহা উপসাগরের দক্ষিণ প্রান্তের কৃত্রিক উপদ্বীপে দ্য মিউজিয়াম অব ইসলামিক আর্ট বা ইসলামী শিল্পকলা জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। এখানে ইসলামী ইতিহাসের বিভিন্ন যুগ অনুযায়ী আলাদা গ্যালারিতে রয়েছে আরব ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র, শিলালিপি, তৈজসপত্র, গহনা, অস্ত্র, পাণ্ডুলিপি। জাদুঘরের পাশাপাশি এখানে রয়েছে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, যেখানে আরবি ও ইংরেজি ভাষার দেড় লাখের বেশি বই রয়েছে। তাছাড়া বিশ্বের প্রায় ২০০ দুর্লভ বই রয়েছে, যা আর কোথাও পাওয়া যাবে না। সেখানে শিশুদের জন্যও রয়েছে পৃথক পাঠগার।

৪৫ হাজার বর্গমিটার স্থানজুড়ে নির্মিত পাঁচতলা জাদুঘরের ভেতরের অংশগুলো কাচ দিয়ে সাজানো। এর একপাশ থেকে আরেকপাশে যেতে হয় কাচের তৈরি সিঁড়ি দিয়ে। মাঝখানে রয়েছে ১৬৪ ফুট উঁচু গম্বুজ।

নারীদের জন্য কিসিলেক্টের স্মার্টওয়াচ

২০০০ সালে জাদুঘরটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০০৮ সালে তা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এর নকশা করেছেন ৯১ বছর বয়সী চীনা বংশোদ্ভূত মার্কিন স্থপতি আইএম পাই। নকশা চূড়ান্ত করার আগে তিনি বিভিন্ন মুসলিম দেশে প্রায় ছয় মাস ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন জাদুঘর, মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন।

সূত্র : দ্য পেনিনসুলা, আলজাজিরা ও অন্যান্য