জুমবাংলা ডেস্ক : জীবন ঘুরছে ডিজিটাল আবর্তে। ঠিক সেভাবেই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এখন অনলাইন পেমেন্ট, যা সম্পাদনে কিউআর কোড বহুল প্রচলিত। হ্যাকাররা তাই কিউআর কোডে পেতেছে প্রতারণার নতুন ফাঁদ।
ডিজিটাল পরামর্শকরা বলছেন, বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে কিউআর কোড লেনদেনে। বিবেচনা না করে বা খতিয়ে না দেখে কিউআর কোড স্ক্যান করা বোকামির শামিল। কিউআর প্রতারণার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে মেনে চলতে পারেন কিছু পরামর্শ।
সতর্কে যা করবেন
প্রচারণায় সুনিশ্চিত হতে বিজ্ঞাপিত সংস্থার ওয়েবসাইট বা কাস্টমার কেয়ার নম্বরে সত্যতা যাচাই করতে হবে।
কিউআর কোড স্ক্যানের সময় দেখতে হবে, যে ইউআরএলে প্রবেশ করছেন, তা (https://) দিয়ে শুরু হচ্ছে কিনা। যদি তা না হয়, সেটি সুরক্ষিত না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
অচেনা কারও সঙ্গে কিউআর কোড স্ক্যান করে অর্থ লেনদেনের প্রয়োজনে তাকে বলতে হবে, কিউআর কোড স্ক্যানের বদলে ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে অর্থ বিনিময় করবেন।
বিপরীত ব্যক্তিটি যদি কিউআর কোড স্ক্যান করে অর্থ বিনিময়ে নাছোড়বান্দা হয়, তাহলে বিশেষভাবে সতর্ক থাকাই শ্রেয় বলে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন।
কারও কাছ থেকে পাওনা টাকা চাইলে তিনি কিউআর কোড পাঠিয়ে স্ক্যান করতে অনুরোধ করতে পারেন। ওই সব ক্ষেত্রেও সরাসরি নেট ব্যাংকিং বা নিজস্ব মোবাইল নম্বরে ওয়ালেটের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনে গুরুত্ব দেওয়া। ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, পাওনা টাকা হাতে পাওয়ার জন্য হয়তো কোনো কিউআর কোড স্ক্যান করলেন। তাতে টাকা তো পেলেনই না, বরং অ্যাকাউন্ট থেকে হুট করেই অর্থ গায়েব হয়ে গেল। যদি সে ক্ষেত্রে অল্প টাকাও কাটা যায়, তাহলে দ্রুতই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে বিষয়টি যথাযথভাবে অবহিত করতে হবে।
সরাসরি টাকা না হাতিয়ে অনেক সময়ে কিউআর কোডের আড়ালে স্মার্টফোন বা গ্যাজেটে ম্যালওয়্যার অনুপ্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং হুটহাট যে কোনো জায়গায় যে কোনো কিউআর কোড স্ক্যান করা থেকে বিরত থাকবেন।
নিজের মোবাইলের স্ক্যানার আর অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) প্রতিনিয়ত আপডেট রাখবেন। কেননা, সিস্টেম আপডেট থাকলে সিকিউরিটি ফিচারও আপডেট থাকে। গ্যাজেটে ব্যাংকিং বা অনলাইন ট্রানজেকশন অ্যাপ থাকলে সেগুলো টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সক্রিয় রাখা জরুরি। ফলে মোবাইল হ্যাক হলেও প্রতারকরা দ্রুত অ্যাকাউন্টে প্রবেশ বা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না।
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের পরামর্শ, যেহেতু হ্যাকাররা কিউআর কোড হ্যাক করছে, সুতরাং আগের তুলনায় সচেতনতা বাড়াতে হবে। হুটহাট লোভনীয় কোনো অফার পেতে কিউআর কোড স্ক্যান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর কোনোভাবেই সুনিশ্চিত না হয়ে কোড স্ক্যান করায় অতি উৎসাহী হওয়া যাবে না।
কিউআর কোড স্ক্যান করতেই অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া গেল অর্থ। এমন ঘটনার নজির মিলছে। বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে যদি কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করে কিউআর কোড স্ক্যানের কথা বলে, তাহলে ভালো করে খতিয়ে দেখবেন বিজ্ঞাপনটি আসল কিনা। না হলেই ঘটবে বিপত্তি।
কেন কিউআর কোড!
প্রথম কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোড ব্যবহৃত হয় জাপানি শিল্পের জন্য পরিকল্পিত ম্যাট্রিক্স বারকোড (দ্বিমাত্রিক বারকোড) ঘরানার ট্রেডমার্ক হিসেবে। বারকোড বলতে মূলত মেশিনে পাঠযোগ্য অপটিক্যাল লেবেলকে নির্দেশ করে, যা পণ্যসেবায় সংযুক্ত তথ্য-উপাত্ত বিষয়ে যথাযথ ধারণা উপস্থাপন করে।
স্ক্যাম টিপস
প্রথমেই ডিভাইসে ভাইরাস স্ক্যানার ইনস্টল করে নেওয়া;
কোডের যথার্থ অবস্থান মূল্যায়ন;
কোডের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করা;
কোডের ইউআরএল যাচাই;
স্টিকারের সঙ্গে টেম্পার করা হয় কিনা তা পরীক্ষা করা।
নিরাপত্তায় যা করবেন
স্মার্টফোনে সাধারণত কিউআর কোড স্ক্যান ও অ্যাকসেস করার কাজে ব্যবহৃত হয়। কিউআর কোড স্ক্যানযোগ্য ডিভাইসে ম্যালওয়ারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ; যা স্মার্টফোনের সব ধরনের কাজে বিপত্তি ঘটাতে পারে। আবার নিজের ডিভাইস গচ্ছিত তথ্য ফাঁস করতে সক্ষম।
ভাইরাস স্ক্যানার ইনস্টল করে যেভাবে পিসিকে সুরক্ষিত করতে হয়, ঠিক সেভাবেই স্মার্টফোনের সুরক্ষাও নিশ্চিত করা জরুরি। স্মার্টফোনে প্রচলিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের মধ্যে অ্যাভাস্ট, নরটন, বিডডিফেন্ডার ও ম্যাকাফি নির্ভরযোগ্য; যা ডিভাইসকে ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা ও ভুলবশত কোনো স্প্যাম লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে গ্রাহককে দেবে নিশ্চিত কারিগরি নিরাপত্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।