ধর্ম ডেস্ক : কোরবানি অর্থ নৈকট্য, সান্নিধ্য, উৎসর্গ। ঈদুল আজহার দিনগুলোতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবাই করাকে ‘কোরবানি’ বলে। (মাজমাউল আনহুর : ২/৫১৬)
কোরবানির বিধান হজরত আদম (আ.)-এর যুগ থেকেই চলে এসেছে। তবে বর্তমানে প্রচলিত কোরবানির গোড়াপত্তন করেন হজরত ইবরাহিম (আ.)।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার (ইসমাঈলের) পরিবর্তে জবাই করার জন্য দিলাম এক মহান জন্তু। আর আমি এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি।’ (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১০৭-১০৮)
মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর রাসুলকে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি তোমার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ো ও কোরবানি করো।’ (সুরা : কাউসার, আয়াত : ২)
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির দিন কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৪৯৩)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘কোরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একেকটি করে নেকি দেওয়া হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৯২৮৩)
আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৩)
কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন, মুকিম, মুসলিম নর-নারী ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের ভেতরে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।
(আল মুহিতুল বুরহানি : ৬/৮৫)
কোরবানির নিসাব
সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রুপা বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাবপত্র, যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমপরিমাণ, তা কোরবানির নিসাব।
গতকাল শনিবার (৮ জুন) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম প্রতি গ্রাম ১৪৭ টাকা। সেই হিসাবে সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্য ৫২.৫*১৭১৪= ৮৯,৯৮৬ টাকা বা এর চেয়ে বেশি।
আর ১৮ ক্যারেটের প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম ৮১২৯ টাকা। সেই হিসাবে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের মূল্য ৭.৫*৮৭.৪৫= ৭ লাখ ১০ হাজার ৮৮১টাকা।
উল্লেখ্য, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মৌলিক প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি ও বাড়ি, ব্যাবসায়িক পণ্য ইত্যাদি কোরবানির নিসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। (আলমগিরি : ৫/২৯২-২৯৩)
নিসাবের মালিক না হলে কোরবানির বিধান
নিসাবের মালিক নয় এমন ব্যক্তির জন্য কোরবানি করা মুস্তাহাব। তবে তিনি কোরবানির নিয়তে কোনো পশু ক্রয় করলে তা কোরবানি করা ওয়াজিব হয়ে যায়। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/১৯২)
কোরবানির সময়
১০ জিলহজ ঈদের নামাজের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ে কোরবানি করা যায়। তবে ১০ জিলহজ ও দিনে কোরবানি করা উত্তম। আর কোরবানির দিনগুলোতে কোরবানি করা সম্ভব না হলে ক্রয়কৃত পশু বা কোরবানির মূল্য সদকা করে দিতে হবে। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৪৫, আলমগিরি : ৫/২৯৫-২৯৭)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।