জুমবাংলা ডেস্ক : ‘আমার আছিয়া ঈদে কত আনন্দ করত। ঈদের সকালে ওর জন্য খিচুড়ি, নুডলস রান্না করে দিতাম। আমার আছিয়া আর কোনো দিন খাবে না এসব খাবার। ঈদের আনন্দে হাতে মেহেদি দেবে না। যার যায় সেই বোঝে, সন্তান হারানের কী জ্বালা। আমাগের আবার কিসের ঈদ।’
সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন দুপুরে নিজ বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলেন আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার।
নিজ বাড়ির বারান্দায় একাকী বসে নিদারুণ কষ্টের প্রহর গুনছেন আছিয়ার মা। আশপাশের সব বাড়িতে যখন ঈদের আনন্দ তখন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে চলছে মাতম। পুরনো স্মৃতি মনে করে শুধুই কাঁদছেন আছিয়ার মা।
প্রতিবেশী মোবারক খান জানান, আছিয়ার পরিবার অত্যন্ত গরিব। আছিয়ার বাবা ফেরদৌস শেখ ভ্যান চালিয়ে সংসারের চাহিদা মেটাতেন। এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় আয়ের সেই পথ বন্ধ। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আছিয়ার মৃত্যুর পর সরকারি বেসরকারি কিছু সহযোগিতা এসেছে। সেটি দিয়ে কোনো রকমে তাদের দিন চলছে। ভবিষ্যতে কিভাবে চলবে গোটা সংসার তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় এ পরিবার।
বড় বোন হামিদা বলেন, ‘ঈদের আগের রাতে আছিয়ার হাতে মেহেদি দিয়ে দিতাম। ঈদের দিন আছিয়ার সঙ্গে অনেক মজা করতাম। আমরা দুই বোন একসঙ্গে ঘুরতে যেতাম। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। সেই আছিয়া এখন নেই। আমার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েই তার এমন অবস্থা হলো। আমরা ওই শয়তানদের ফাঁসি চাই।’
বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় ৫ মার্চ বুধবার রাতে ৮ বছরের আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনার পর তাকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ভর্তি কার হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফদিরপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৩ মার্চ সে মারা যায়।
এ ঘটনায় হিটু শেখকে প্রধান করে চারজনের নামে মামলা করেছেন শিশুটির মা আয়েশা আক্তার। মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখ ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিরা মাগুরা জেলা কারাগারে রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।