আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান দাবি করেছিল, ভারতীয় বায়ুসেনার অন্তত ৬টি রাফালে যুদ্ধবিমান নামিয়েছে তারা। এতদিন পাকিস্তানের সেই দাবি নিয়ে ভারত মুখ খোলেনি। তবে শনিবার সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান মেনে নিয়েছেন, অপারেশন সিঁদুরে ভারত যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। তবে সংখ্যার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান জোর দিলেন, ত্রুটি খোঁজায়।
সংখ্যাটা যাই হোক। সেনা সর্বাধিনায়কের বক্তব্যের পর এটা পরিষ্কার যে, ফ্রান্স থেকে আনা রাফালে যুদ্ধবিমান খোয়াতে হয়েছে ভারতকে। অর্থাৎ পাক দাবি আংশিক হলেও সত্যি। এটা ভারতের জন্য যেমন ধাক্কা, তেমনই ধাক্কা ফ্রান্সের সমরাস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা দাসাল্ট অ্যাভিয়েশনেরও। সার্বিকভাবে ফরাসি প্রযুক্তিই প্রশ্নের মুখে। মজার কথা হল, যে পাকিস্তান রাফালে নামানোর দাবি করছিল, সেই পাকিস্তানই আবার ওই যুদ্ধবিমানের প্রশংসা করছে। পাকিস্তানের এয়ার ভাইস মার্শাল ঔরঙ্গজেব আহমেদ বলছেন, “রাফালে কিন্তু যথেষ্ট ভালো যুদ্ধবিমান। খুব কম যুদ্ধবিমানই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাফালের মতো ভয়ংকর হতে পারে।”
প্রশ্ন হল, যে রাফালে নিয়ে অভিযান চালাতে গিয়ে ভারতকে লোকসানের মুখ দেখতে হল, পাকিস্তান কেন সেটার প্রশংসা করছে? এর নেপথ্যে একাধিক কারণ থাকতে পারে। এক, রাফালের প্রশংসা করে পাক সেনার আধিকারিক বোঝাতে চাইলেন, যে যুদ্ধবিমানে কোনও সমস্যা নেই। যত সমস্যা ভারতীয় পাইলটদের দক্ষতায়। রাফালে চালানোর মতো সমরশিক্ষা ভারতীয় পাইলটদের নেই। দুই, পাক সেনার কর্তা বোঝাতে চেয়েছেন তাঁরা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, সেই চিনা প্রযুক্তি রাফালের মতো শক্তিশালী যুদ্ধবিমান নামাতেও সক্ষম।
এ তো গেল সমর কৌশল। এর বাইরে একটা বিরাট কূটনৈতিক এবং আর্থিক কারণও রয়েছে। পাকিস্তানের ‘বন্ধু’ একাধিক দেশ এই রাফালে ব্যবহার করে। এই যেমন পাক বন্ধু কাতারের হাতে রয়েছে ৩৬টি রাফালে। গ্রিস (৫৪টি), সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (৮০টি) মতো দেশের বায়ুসেনাও রাফালেতে সুসজ্জিত। আর এক মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়াও রাফালে কেনার জন্য দাসাল্টের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ঘটনাচক্রে এরা সকলেই পাকিস্তানের বন্ধু দেশ। এখন পাকিস্তান যদি রাফালের নিন্দা করত, তাহলে এই দেশগুলির সমরশক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে যেত। তাতে এই দেশগুলি পাকিস্তানের উপর খাপ্পা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাছাড়া রাফালে যে ফরাসি প্রযুক্তিতে তৈরি, সেই ফ্রান্সেরই একাধিক সংস্থার সঙ্গে অস্ত্র কেনার চুক্তি রয়েছে পাকিস্তানের। ফ্রান্সের প্রথম সারির যুদ্ধবিমানের প্রশংসা না করলে সেই চুক্তিতেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।