জুমবাংলা ডেস্ক: ট্রেনে চড়া বিনা টিকিটের যাত্রীরা আত্মীয় নন এবং তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
শনিবার সকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে কেউ হয়তো সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু সেদিন বিকালেই জানা গেল, ওই তিন যাত্রীদের একজন ইমরুল কায়েস প্রান্ত রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারের বোনের ছেলে। তার ট্রেনযাত্রার সঙ্গী হাসান ও ওমর রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মীর মামাতো ভাই। ঈশ্বরদী শহরের নূর মহল্লায় তাদের বাড়ি।
এবং রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারের ফোনের পরই টিটিই শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়।
আজ অনেকটা দুঃখ প্রকাশের সুরে রেলমন্ত্রী জানালেন, তাকে কিছু না জানিয়েই ওই ফোনটি তার স্ত্রী করেন। বিষয়টি ঠিক করেননি তিনি। তবে বরখাস্ত করার কথা বলেননি তার স্ত্রী, জানান রেলমন্ত্রী।
রবিবার দুপুরে রেলভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান রেলমন্ত্রী সুজন।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী তার আত্মীয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন, কিন্তু বরখাস্ত করার কথা তিনি বলেননি। আমার স্ত্রী আমাকে না জানিয়ে যেটা করেছে সেটা ঠিক করেননি। এতে আমি বিব্রত। আমার স্ত্রী যদি কোনো ধরনের ভুল করে থাকেন… আমার ইনভলবমেন্ট ছিল না। যেটা বলা হচ্ছে বা টার্গেট করা হচ্ছে, মন্ত্রী এই কারণে এটা ঠিক না। তবে মেসেজটা যেভাবে গেছে এটা সঠিক হয়নি।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, কেন এত দ্রুত টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়েছে এ জন্য পাকশির ডিসিওকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া টিটিইকে পুরস্কৃত করাও হতে পারে।
রেলমন্ত্রী বলেন, একজন টিটিইর দায়িত্বই হচ্ছে এটা দেখা যে, কোনো যাত্রী বিনা টিকিটে কেউ ভ্রমণ করছেন কিনা। যাত্রীদের সহযোগিতা করা। ডিসিপ্লিন আনার ক্ষেত্রে একজন টিটিইর এটাই দায়িত্ব। আমি এই কথাটাই বলেছি।
বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়া তিনজনের সঙ্গে সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, মাত্র ৯ মাস হলো আমার বিয়ে হয়েছে। নতুন যে স্ত্রীকে আমি গ্রহণ করেছি, তিনি ঢাকাতেই থাকেন। তার মামাবাড়ি ও নানাবাড়ি হলো পাবনা। আমি শুনেছি তারা (কায়েস-হাসান) আমার আত্মীয়। এটা এখন ঠিক, যেটা আমিও এখন শুনেছি। এর আগে পর্যন্ত আমি জানতাম না, এরা কারা এবং আমার জানার কথাও না।
টিআইবির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, টিআইবি দ্রুত সময়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এখানে মন্ত্রীর কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা দেখার আগেই তারা এটা করেছে।
এদিকে রেলের সেই ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রোববার দুপুর ১২টায় ঈশ্বরদী রেলওয় জংশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহিদুল ইসলাম।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া তিন যাত্রীকে বিনাটিকিটে রেল ভ্রমণের দায়ে জরিমানা করেন টিটিই শফিকুল ইসলাম।
আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি কামরায় চড়ে ঢাকায় ফিরছিলেন তারা।
পরে বৃহস্পতিবার রাতে ‘যাত্রীর সঙ্গে অসদাচরণের’ অভিযোগে টিটিই শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বরখাস্ত হওয়া টিটিই মো. শফিকুল ইসলাম রেলওয়ে জংশন ঈশ্বরদীর টিটিই হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে যুক্ত হন।
ঘটনার পর দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন রেলমন্ত্রী।
এরইমধ্যে পুরো বিষয়টি তদন্তে শনিবার রেলের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে পাকশীতে আজ ওই তিন যাত্রী ও টিটিইর সঙ্গে কথা বলছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।