জুমবাংলা ডেস্ক : নিউটন বিশ্বাস। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। ট্রেনের টিকিট বিক্রয়কারী সিএনএস বিডির যাত্রা শুরুর পর থেকে সার্ভার অপারেটর হিসেবে কাজ করে আসছিলেন তিনি। সিএনএস এর দায়িত্বে থাকার সময়কালীন সময় থেকেই তার উত্থান শুরু। নিউটন ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাধর। সফটওয়ার দায়িত্বে থাকার কারণে সব ছিল তার নখদর্পণে।
রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এমনকি বর্তমান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার শাহাদাত আলীও যে কোনো টিকিটের জন্য প্রত্যেকদিন নিউটনকে ফোন দিতেন। অথচ কমলাপুর স্টেশন মাস্টারকে ডিজি ফোন করতেন না। প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তি নিউটনকে সমীহ করায় সে এতই প্রভাবশালী ছিল যে, কাউকে পরোয়া করতো না। এমনকি রেলের ডিআরএম বা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার অনুরোধেও নিউটন পাত্তা দিতো না। রেলে নিউটনকে টিকিটের জন্য রাঘববোয়াল বলে ডাকা হতো।
র্যাব ও রেলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারী চক্রের অন্যতম হোতা নিউটন বিশ্বাস সম্পর্কে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) অভিযান চালিয়ে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ থেকে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারী চক্রের নয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে একজন হলেন এই নিউটন বিশ্বাস। র্যাব বলছে, নিউটন সহজ ডটকম এর সার্ভার অপারেটর। তবে র্যাবের দাবি, এ চক্রের মূলহোতা পিয়ন মিজান ঢালী।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে রেলের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, কেউ টিকিট দিতে না পারলে নিউটন ঠিকই টিকিট ম্যানেজ করে দিতেন। মিজান ঢালী ও সবুর ছাড়াও নিউটনের সাথে ঢাকায় এক ডজন টিকিট কালোবাজারী চক্রের সদস্যের সাথে তার সখ্য ছিল। ঈদের সময় সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়। যাত্রা বাতিল হওয়া টিকিটগুলো অনলাইনে ফেরত দেওয়া হয়। ফেরত টিকিট নিউটন তার এই চক্রের কাছে পাচার করে দিতো।
তারা আরও জানিয়েছে, প্রতি ঈদের সময় আন্তঃনগর সব ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়। সকাল আটটায় সার্ভার চালু হওয়ার সাথে সাথে এক দুই মিনিটের মধ্যে সব টিকিট হাওয়া হয়ে যেতো। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার যাত্রীরা অভিযোগকরেও রেলের কর্তৃপক্ষ কোনো কান দেননি। বিষয়টির সুরাহা করেনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিউটনের হাতে সার্ভারের দায়িত্ব থাকার কারণে বিপুল পরিমাণ টিকিট সে নিজের মতো করে কম্পিউটারে ব্লক করে রাখতো। আবার এইসব টিকিট কৌশলে বের করে তার চক্রের কাছে পাঠিয়ে দিতো নিউটন। যে কারণে সার্ভারে হিট করেও সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পেতেন না।
নিউটনের ব্যাপারে র্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট হিসেবে সিএনএস বিডিতে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে ২০২০ সালে সহজ ডটকমে চুক্তিবদ্ধ হলেও তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়। সে সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতো বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতো। গ্রেফতার সবুর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহজ ডটকমের স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ হিসেবে চাকরি করতো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।