জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ভোর থেকেই মুষলধারে ঝরছে বৃষ্টি। বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে এই বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা থেমে থেমে চলছেই।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকাসহ দেশের ১৮টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে- রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অপর এক বার্তায় শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা পর্যন্ত সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা (১ থেকে ২) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং অন্যত্র তা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, সাঙ্গু, গোমতী, মুহুরী, মাতামুহুরী ও হালদা নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া আগামী দুইদিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে, যার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের এই সকল নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী একদিনে নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, সিলেট বিভাগের সুরমা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে, যার প্রেক্ষিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী দুইদিনে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ- খোয়াই, ভুগাই, ধলাই, যাদুকাটা, মনু ও সোমেশ্বরী নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। অপরদিকে সারিগোয়াইন ও কংস নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের এই সকল নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী দুইদিনে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে আগামী তিনদিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা অধিক উচ্চতার জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে।
এদিকে রংপুর বিভাগের তিস্তা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। তবে ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে দুধকুমার নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী দুইদিন পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
এ ছাড়া রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল স্থিতিশীল আছে ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী চার দিন পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড আরও জানায়, রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুইদিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী তিনদিন গঙ্গা-পদ্মা উভয় নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।