জুমবাংলা ডেস্ক : নাম রাজা মিয়া। বয়স ৬৫ ছুঁয়েছে। তার একসময় ‘রাজত্ব’ ছিল। সংসাররাজ্যে দুই ‘সেনাপতি’ ছিলেন ছেলে জসিম ও রুবেল। বড় হয়ে তারাই সংসার থেকে বের করে দিয়েছেন রাজা মিয়াকে।
‘রাজ্য ছাড়া’ রাজা ঠাঁই নেন মসজিদে। তাতেও খুশি নন ছেলেরা। মসজিদ কমিটির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বের করে দেন বাবাকে। এরপর রাজা মিয়া জীবন-জীবিকা চালাতে এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন শহরে ভিক্ষা শুরু করেন। এভাবে কেটে গেছে আট বছর।
সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজা মিয়া। ভিক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছে না আর। বাধ্য হয়ে শরণাপন্ন হন ছেলেদের। কিন্তু ছেলেরা শুনেও এড়িয়ে যান রাজা মিয়াকে। এরপর বাবার আর কোনো খোঁজ নেননি জসিম ও রুবেল।
প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছেলেরা খোঁজ না নেওয়ায়, ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাজা মিয়া। ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে লালমোহন থানায় মামলা করেন তিনি।
রাজা মিয়া ভোলার লালমোহন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অভিযুক্ত দুই ছেলে জসিম ও রুবেল বর্তমানে বান্দরবানের বাসিন্দা। এদের মধ্যে জসিম সেখানে কাঠের ব্যবসা করেন এবং রুবেল সিএনজি ব্যবসা। আর্থিকভাবে দুজনই প্রতিষ্ঠিত বলে জানিয়েছেন রাজা মিয়া। স্ত্রীও থাকেন ছেলেদের সঙ্গে। একমাত্র মেয়েরও বিয়ে হয়েছে বান্দরবানে।
বৃদ্ধের অভিযোগ, ছেলেরা তার সকল সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন। এর পর থেকে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী দুই ছেলে ভরণ-পোষণ দেন না, খোঁজও নেন না। এ কারণে জীবন চালাতে তাকে ভিক্ষা করতে হয়। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে ছেলেদের জানালেও তারা গুরুত্ব দেননি। তাই বাধ্য হয়ে দুই ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
জানা যায়, রাজা মিয়ার সকল সম্পদ লিখে নিয়েছিলেন ছেলেরা। এরপর সেই বাড়ি-জমি বিক্রি করে পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন জসিম ও রুবেল। বর্তমানে রাজা মিয়া সরকারি একটি বাঁধে ঝুপড়ি ঘরে থাকেন। সেখানেই নিজের সঙ্গে লড়ছেন তিনি। কেউ খাবার দিলে খেতে পারেন, না দিলে উপোস থাকেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাজা মিয়া নামের এক বৃদ্ধ বাবা এসে দুই ছেলের বিরুদ্ধে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। পিতার-মাতার ভরণ-পোষণ আইন হওয়ার পর থেকে লালমোহন থানায় আরো ৪-৫টি মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।