জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। তিনি ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতিও ছিলেন।
তার অনুপস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতা-কর্মীদের ওপর এবং তাদের বসত-বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে। হামলায় হতাহতও হয়েছেন কিছু নেতা-কর্মী। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের কিছু কার্যালয়ও। হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই।
এ অবস্থায় ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দলটির অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। দলের এমন বেহাল পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দিলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
দেশ ত্যাগের পর শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে। ক্ষমতা ছাড়ার পর এখন পর্যন্ত তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও এক সাক্ষাৎকারে তার ছেলে জয় জানিয়েছিলেন, তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। জয় নিজেও রাজনীতিতে না ফেরার কথা জানিয়েছিলেন। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে শেখ হাসিনা আবার দেশে ফিরবেন।
এবার ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’-কে জয় জানিয়েছেন, শিগগিরই রাজনীতিতে ফিরে দলের হাল ধরবেন তিনি নিজেই। ওয়াশিংটনে অবস্থিত নিজের বাড়ি থেকে ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, ‘দল (আওয়ামী লীগ) ও এর কর্মীদের বাঁচাতে আমি সবকিছু করতে প্রস্তুত। যদি এজন্য আমাকে রাজনীতিতে আসতে হয়, তা থেকে আমি পিছপা হবো না। ’
জয় আরও বলেন, ‘চলতি মেয়াদ শেষে আমার মা (শেখ হাসিনা) এমনিতেই অবসর নিতেন। আমার নিজের রাজনীতিতে আসার কোনো ইচ্ছে ছিল না এবং আমি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী। কিন্তু গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে যা হচ্ছে তাতে এটা নিশ্চিত যে, নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এখন দলের প্রয়োজনে আমাকে সক্রিয় হতে হবে এবং আমি এখন একেবারে প্রস্তুত আছি। ‘
শেখ হাসিনা বিদায় নেওয়ার পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। গতকাল এই সরকার শপথ গ্রহণ করার আগেই অবশ্য নির্বাহী আদেশে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্তরাজ্য থেকে নির্বাসন শেষে দেশে ফিরছেন বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে দলটি একটি সমাবেশও করেছে দলীয় কার্যালয়ের সামনে।
এছাড়া জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলের সব রাজবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগও অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন জয়। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে এবং আমরা জিতেও যেতে পারি। বাংলাদেশে আমাদের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। ’
এদিকে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করলেও ইউরোপ ও আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন, এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে জয় বলেন, আপাতত তিনি ভারতেই আছেন। অল্প সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
শেখ হাসিনার অবৈতনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন সজীব ওয়াজেদ।
একনজরে দেখুন ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয় পেলেন
গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর বিকেলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।