ধর্ম ডেস্ক : ইসলামে হজের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। ইসলামের চতুর্থ ভিত্তি হচ্ছে হজ। প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্যলাভ করা যায়।
হজ শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো সংকল্প করা, ইচ্ছে করা এবং সফর করা ইত্যাদি। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়- নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট কার্যাবলীর মাধ্যমে বায়তুল্লাহ শরিফ জেয়ারত করাকে হজ বলা হয়।
হজের নির্দিষ্ট সময় হলো- আশহুরে হুরুম তথা শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজের প্রথম ১০ দিন; বিশেষত জিলহজের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন। এ পাঁচ দিনই মূলত হজ পালন করা হয়। হজের নির্ধারিত স্থান হলো পবিত্র কাবা, সাফা-মারওয়া, মিনা, আরাফা ও মুজদালিফা। দূরবর্তী হাজিদের জন্য মদিনা মুনাওয়ারায় রাসুল (স.)-এর রওজা জেয়ারত করা ওয়াজিব। (আসান ফিকাহ, খণ্ড: ০২, পৃষ্ঠা-২৫১)
হজের কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে ইহরাম, তালবিয়া, তাওয়াফ ও সায়ি, অকুফে আরাফাহ, অকুফে মুজদালিফা, অকুফে মিনা, কংকর নিক্ষেপ, দম ও কোরবানি, হলক ও কছর এবং জিয়ারতে মদিনা-রওজাতুর রাসুল ইত্যাদি।
হজের গুরুত্ব ও ফজিলত
আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, এক উমরা আরেক উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহর ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়। আর হজে মাবরুরের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। (সহিহ বুখারি, ১৭৭৩; সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯; মুসনাদে আহমদ: ৭৩৫৪; সহিহ ইবনে হিববান; ৩৬৯৫)
অন্য হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে হজ করল এবং এসময় অশ্লীল ও গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকল, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে। (বুখারি: ১৫২১)
জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হজ ও ওমরাকারীরা আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দোয়া করলে তাদের দোয়া কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদের তা দেওয়া হয়। (মুসনাদে বাজজার: ১১৫৩)
আরেক হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, তোমরা হজ-ওমরা সঙ্গে সঙ্গে করো। কেননা, এ দুটি দারিদ্র্য ও গোনাহ এভাবে দূর করে, যেভাবে হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। আর মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৮৮৭)
বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, হজের জন্য খরচ করা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মতোই, যার সওয়াব সাত শ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। (মুসনাদে আহমদ: ২৩০০০)
একবার রাসুলকে (স.) জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি ঈমান আনা। আবার প্রশ্ন করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। আবারও প্রশ্ন করা হলো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, হজে মাবরুর তথা মকবুল হজ। (বুখারি: ১৫১৯)
হজের পাঁচটি শর্ত
১. মুসলিম হওয়া
২. আকল থাকা বা বিবেকবান হওয়া অর্থাৎ পাগল না হওয়া
৩. বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া
৪. আজাদ বা স্বাধীন হওয়া অর্থাৎ কারো গোলাম না হওয়া এবং
৫. দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়া। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে আরেকটি শর্ত যুক্ত হবে, সেটি হলো- সঙ্গে ‘মাহরাম’ (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত জায়েজ) থাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।