জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। রমজান মাসজুড়ে সিয়াম সাধনার পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য আনন্দের উপলক্ষ্য নিয়ে আসে এই উৎসব। আর সিয়াম সাধনায় মুসলমানদের প্রতিদিনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ খেজুর। দেশে রমজান মাসে তাই খেজুরের চাহিদা বেড়ে যায় অন্য মাসের চেয়ে অন্তত ১২ গুণ। চাহিদার সঙ্গে বাড়ে দামও। অথচ বছরের ব্যবধানে এবার এই পণ্যটির দাম এখনই বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। যদিও রমজান আসতে আরও দুই মাস বাকি।
বাজারের সবচেয়ে কম দামি খেজুর হিসেবে পরিচিত জিহাদি ও দাবাস। বর্তমানে প্রতি কেজি এই জাতের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকায়। বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। শুধু জিহাদি বা দাবাস নয়, সব খেজুরের দামই বেড়েছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৪০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বরই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে খেজুরের দাম। যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। রোজার আগেই আকাশচুম্বী এ দাম ভোগাবে পুরো রমজানজুড়েই।
এদিকে অস্বাভাবিক এই দাম বৃদ্ধির জন্য খেজুর আমদানিকারকদের কারসাজিকে দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। এতে কমে গেছে বেচাবিক্রি।
তবে, এই অভিযোগ মানতে নারাজ আমদানিকারকরা। তারা বলছেন, ফলমূলকে বিলাসি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করায় দেশে এরকম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে খেজুরের দাম। উচ্চশুল্কের কারণে আমদানি হচ্ছে চাহিদার তুলনায় নামমাত্র। এতে রমজানে পণ্যটির ভয়াবহ সংকট তৈরির আশঙ্কা আমদানিকারকদের। এ অবস্থায় বাজার ঠিক রাখতে শুল্ক কমানোর সঙ্গে এলসি জটিলতা দূর করার তাগিদ তাদের।
আমদানিকারকরা বলছেন, বিলাসপণ্য বলে এতে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হয়। এরসঙ্গে আছে আরডি, এআইটি ও এটি’র বোঝা। এ অবস্থায় এলসি জটিলতা, শুল্ক বাধা দূর করা না হলে, আসন্ন রমজানে খেজুরের ভয়াবহ সংকট তৈরির আশঙ্কা আছে।
দেশে খেজুরের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। এর মধ্যে শুধু রমজানেই দরকার হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন। এ বছর এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার টনের এলসি খুলতে পেরেছেন ব্যবসায়ীরা; আর আমদানি হয়েছে ১৫ হাজার টন। পথে আছে ১০ হাজার টন।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজি খেজুর আমদানি করতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ২৭৫ থেকে ২৮০ টাকা। শুল্ক কমাতে ব্যবসায়ীদের কয়েক দফা দাবির প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে গত নভেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি এনবিআর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।