ধর্ম ডেস্ক : রমজান হল ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মশুদ্ধির মাস। আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহে এই মাস মুসলমানদের জন্য বরকতময় ও কল্যাণপূর্ণ। এই মাসে অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি ইবাদত করা হয়, কারণ এটিই সেই মাস যেখানে লাইলাতুল কদর রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
কোরআনের ঘোষণা
আল্লাহ তাআলা বলেন,
رَمَضَانَ ٱلَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلْقُرْءَانُ هُدًۭى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٍۢ مِّنَ ٱلْهُدَىٰ وَٱلْفُرْقَانِ
অর্থ: “রমজান মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল করা হয়েছে—মানুষের পথপ্রদর্শক, হিদায়াত ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে।” (সুরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫)
রমজানের ফজিলত
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“রমজান একটি বরকতময় মাস। এই মাসে আল্লাহ জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেন, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেন এবং শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন। এই মাসে এমন একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি এই রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে বড়ই দুর্ভাগা।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ৬৮৩)
রমজানে করণীয় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আমল
১. দান-সদকা করা
এই মাসে বেশি বেশি দান করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং রমজান মাসে দান-খয়রাত বেশি করতেন।
২. উত্তম চরিত্র গঠন
রমজান আত্মসংযম ও চারিত্রিক পরিশুদ্ধির মাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যদি কেউ তোমাকে গালাগালি বা ঝগড়া করতে আসে, তবে তুমি বলবে—আমি রোজাদার।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৫১)
৩. ইতিকাফ করা
রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি বছর শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন।
৪. দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া
রমজান হল মানুষকে ইসলাম ও সৎপথে আহ্বান করার উত্তম সময়।
৫. উমরাহ পালন
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “রমজানে উমরাহ করলে তা আমার সঙ্গে হজ করার সমতুল্য।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৬৩)
৬. লাইলাতুল কদর তালাশ করা
এই রাত সম্পর্কে কোরআনে এসেছে,
لَيْلَةُ ٱلْقَدْرِ خَيْرٌۭ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍۢ
অর্থ: “লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।” (সুরা আল-কদর, আয়াত: ৩)
৭. বেশি বেশি দোয়া করা
হাদিসে এসেছে, “প্রতিদিন ইফতারের সময় আল্লাহ বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।” (আল-জামিউস সাগির, হাদিস: ৩৯৩৩)
৮. ইফতার করা ও অন্যকে করানো
রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করায়, সে রোজাদারের মতোই সওয়াব পাবে।” (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস: ১৭৪৬)
৯. তওবা ও ইস্তেগফার করা
রমজান তওবা করার সর্বোত্তম সময়। কোরআনে এসেছে,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ تُوبُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ تَوْبَةًۭ نَّصُوحًۭا
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করো।” (সুরা আত-তাহরিম, আয়াত: ৮)
১০. সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়া
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ…
(যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে এটি পাঠ করবে, সে জান্নাতবাসী হবে।) (সহিহ বুখারি: ৬৩০৬)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।