আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর মিত্র চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ ইউক্রেনকে সমর্থন ও সহযোগিতার কারণে পোল্যান্ডে আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। বুধবার সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক ভিডিওতে এই সেনাপতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবেশী দেশকে সরবরাহ করা অস্ত্র পোল্যান্ডের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।
বিবিসি’র প্রতিনিধির অনুবাদ অনুসারে কাদিরভ বলেছেন, ইউক্রেন ইস্যু শেষ হয়ে গেছে। আমি পোল্যান্ড নিয়ে আগ্রহী। পোল্যান্ড, তারা কী অর্জন করতে চাইছে?
কাদিরভ আরও বলেছেন, ইউক্রেনের পর নির্দেশ দেওয়া হলে ৬ সেকেন্ডের ভেতর আমরা দেখিয়ে দেবো কী করতে পারি। আপনাদের (পোল্যান্ড) উচিত সরবরাহ করা অস্ত্র ও ভাড়াটে যোদ্ধাদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং আমাদের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যা করেছেন সেজন্য সরকারিভাবে ক্ষমা চাওয়া।
কাদিরভ যে রাষ্ট্রদূতের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি পোল্যান্ডে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই আন্দ্রিভ। এই মাসের শুরুতে পোল্যান্ডের রাজধানীতে সোভিয়েত সামরিক সমাধি পরিদর্শনের সময় তার মুখে লাল রঙ ছুড়ে মারা হয়েছিল।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ করে রাশিয়া। দেশটির দাবি, তারা ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে। তবে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা এই আক্রমণকে উসকানি ছাড়াই আগ্রাসী যুদ্ধ হিসেবে দাবি করছে। চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও বেসামরিক হত্যার অভিযোগ এনেছে পশ্চিমারা। রাশিয়া এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
রাশিয়ার আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের সবচেয়ে শক্তিশালী সমর্থক ও সহযোগিতাকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে পোল্যান্ড। শুধু অস্ত্র ও কূটনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি কয়েক লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিচ্ছে দেশটি।
গত মাসে এক বৈঠকে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাতিউজ মোরাভিয়েস্কি বলেছেন, ইউক্রেনকে ১৬০ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে পোল্যান্ড। এই সরঞ্জামগুলো ইউক্রেন, পোল্যান্ড ও ইউরোপের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে।
গত তিন মাসে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে পোল্যান্ড ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে।
মার্চে কাদিরভ ঘোষণা দেন, পুতিনের যুদ্ধের সমর্থনে তিনি ইউক্রেনে অবস্থান করছেন। কিয়েভে যুদ্ধের সম্মুখ সারিতে অবস্থান করছেন বলেও দাবি করেন। তবে পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা এই দাবি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ইউক্রেনে তার উপস্থিতির কারণে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করতে শুরু করেন যে যুদ্ধের নতুন পর্যায় শুরু হয়েছে।
রাশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল ওয়েইস এর আগে বলেছিলেন, কাদিরভ হয়তো মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত। কাদিরভ একজন সাইকোপ্যাথ, যিনি নিজেই রাজনৈতিক বন্দিদের নির্যাতন করেন।
অতি সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছে, চেচনিয়া নিজ দেশের নাগরিকদের অপহরণ করছে এবং আক্রমণে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে লড়াই করতে বাধ্য করছে। ১ অ্যাডাট নামে একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী চেচনিয়া ও রাশিয়ার প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তারা দাবি করেছে, বেসামরিকরা ‘গণ অপহরণের’ শিকার হচ্ছে।
গোষ্ঠীটি লিখেছে, অপহরণকারীদের একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে। যাতে লেখা থাকে তিনি স্বেচ্ছায় ইউক্রেনে যুদ্ধে যাচ্ছেন। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এভাবে যাদের ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে তাদের রণক্ষেত্রে কামানের খোরাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সূত্র: ইয়াহু নিউজ, এনডিটিভি
দেশভাগের ৭৫ বছর পর প্রথমবারের মতো মুসলিম বোনের সঙ্গে শিখ ভাইদের দেখা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।