জুমবাংলা ডেস্ক : ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ শ্রমিক নিহত হন। সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল বুধবার। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) আয়োজিত ‘নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরির অর্জন ও চ্যালেঞ্জ: রানা প্লাজা–পরবর্তী উদ্যোগসমূহের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, রানা প্লাজা ধসের ১১ বছরেও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয়নি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন সব মামলা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। তাই বক্তারা আলোচনা সভা থেকে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণসহ মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এছাড়াও নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরিতে সমন্বিত প্রচেষ্টার সঙ্গে জবাবদিহি নিশ্চিত করা, কার্যকর ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন।
আলোচনা সভায় বিলসের মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের ঘটনা শুধু দুর্ঘটনা বলে মানতে আমরা নারাজ; শিল্প পরিদর্শনের দুর্বলতা ও তদারকির ঘাটতির কারণে এটা হয়েছে। রানা প্লাজার ঘটনার পর বেশ কিছু ইতিবাচক অর্জন হয়েছে, যেমন বেশ কিছু আইনে পরিবর্তন এসেছে, সরকারি পরিদপ্তর ও অধিদপ্তর হয়েছে, নতুন অনেক ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধিত হয়েছে। তবে নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরির জন্য এগুলোর কোনোটাই পর্যাপ্ত নয়। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত অনেক শ্রমিক ক্ষতিপূরণ ও যথাযথ চিকিৎসা পাননি। অনেক আহত শ্রমিক পরবর্তী সময়ে আর কাজে ফিরতে পারেননি।’
বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পরে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা অন্যান্য শিল্প খাতে কাজে লাগানো হয়নি। সে জন্য চট্টগ্রামে কনটেইনার ডিপো, নারায়ণগঞ্জে হাশেম ফুডের কারখানা, নিমতলী ও চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকেরা কাঙ্ক্ষিত মানদণ্ডে ক্ষতিপূরণ পাননি। অনেক দুর্ঘটনার পরে মামলা নেওয়া হয়নি; দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা সেবা পাননি আহত শ্রমিকেরা।
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিয়ম মানার বিকল্প নেই বলে জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, স্বল্পসংখ্যক ফায়ার ফাইটার দিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করা কঠিন। সে জন্য তিনি দুর্ঘটনা রোধে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ, জাতীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বেচ্ছাসেবক তৈরির পরামর্শ দেন।
বিলসের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান সিরাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডাস্ট্রি-অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদল, গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সমন্বয়কারী নইমুল আহসান জুয়েল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন, আইএলওর প্রতিনিধি মউরাইস লেন ব্রোকস প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।