লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমাদের দেশের প্রতিটি জেলাতেই কিছু না কিছু জনপ্রিয় খাবার রয়েছে। যা ওই জেলার ঐতিহ্য বহন করে। তেমনি রংপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবারের নাম হচ্ছে ‘শোলকা’। রংপুর ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এই খাবারটির পরিচিতি নেই বললেই চলে। মূলত রংপুর জেলাসহ আশপাশের বেশ কিছু উপজেলায় সুস্বাদু খাবার হিসেবে শোলকা অনেক জনপ্রিয়। আঞ্চলিক এই খাবারটি পাট শাক আর সোডা দিয়ে রান্না করতে হয়।
টেবিলের খাবার দ্রুত সাবাড় করতেও খ্যাতি রয়েছে খাবারটির। অর্থাৎ শোলকা দিয়ে খাবার দ্রুত খাওয়া সম্ভব। শাক দিয়ে শোলকা রান্না করা হলেও ভিন্ন স্বাদের এই খাবার তৈরির প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। অন্য সব শাকের মতো শোলকার রান্না এক নয়।
শোলকা রান্নার প্রধান উপকরণ পাটশাকের পাতা। এই পাতা কাটার ধরনটা একটু ভিন্ন। পাটশাকের পাতা গুছিয়ে হাতের মুঠো ভর্তি করে নিয়ে কুচি কুচি করে কাটতে হয়। পাটশাক যেহেতু একটু তেতো হয় তাই এর তিতাভাব কাটানোর জন্য আরো পাঁচ থেকে সাত প্রকারের শাকের পাতা একটু করে দেওয়া হয় শোলকার উপকরণ হিসেবে। এতে লাউ শাকের পাতা, কুমড়া শাকের পাতা, পুঁইশাকের পাতা, কচু পাতা, সজনে ডাটার পাতা, নাপা শাকের পাতাসহ হাতের নাগালে যা পাওয়া যাবে সেই শাকের পাতা কুচি কুচি করে এতে দেওয়া যাবে।
এবার আসা যাক রান্নায়, শোলকার অন্যতম আরেকটা উপাদান হলো খাবার সোডা। যা ছাড়া শোলকা রান্না করা যাবে না। মূলত, শোলকাকে পিচ্ছিল করার জন্য এক চিমটি খাবার সোডা দেয়া হয়।
প্রথমে অল্প পরিমাণে পানি গরম করে সেখানে পরিমাণ মতো লবণ, কাঁচা মরিচ, রসুন এবং সোডা দিয়ে নেড়ে, কেটে রাখা পাটশাকসহ অন্য শাক দিতে হয়। এবার অল্প একটু আদা কুচি। ১০ থেকে ১৫ মিনিট হালকা আচে নাড়তে হয়। ব্যাস হয়ে গেল প্রিয় ‘শোলকা’। আর শোলকার মধ্যে কাঁঠালের বিচি দিলে তো কথাই নাই। এর স্বাদ হয় আরো অসাধারণ।
এদিকে রংপুরের গ্রামীণ জনপদের জনপ্রিয় এই খাবার এখন সহজেই পাওয়া যায় না। দিন বদলের হাওয়ার সাথে সাথে আধুনিকতার কাছে হারিয়ে যেতে বসেছে ‘শোলকা’। অথচ একটা সময় ছিল এ অঞ্চলে কারো বাসায় মেহমান আসলে খাবারের তালিকায় এটিও থাকত। বর্তমান শহুরে জীবনে এই খাবার নতুন প্রজন্মের কাছে খুব একটা পরিচিত না হলেও গ্রামীণ জনপদে এখনো রয়েছে শোলকার বেশ কদর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।