আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘বাহুবলী’ রকেটে করে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছেন চেন্নাই থেকে ঢাকাগামী বিমানের যাত্রীরা। বিমানের জানালা থেকে চন্দ্রযান-৩-এর উৎক্ষেপণের বিরল দৃশ্য দেখতে পান তারা। অনেকেই এই মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন সেই দৃশ্য।
শনিবার (১৫ জুলাই) টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেয় ইসরোর চন্দ্রযান-৩। প্রায় একই সময়ে চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দিয়েছিল ইন্ডিগোর একটি বিমান। বিমান যখন বঙ্গোপসাগরের উপর সে সময় পাইলট ঘোষণা দেন ‘ আপনারা জানলা খুলে দেখুন কী দৃশ্য অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য।’
শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপিত হয়। ৪০ দিন পর আগামী ২৩ থেকে ২৪ অগস্টের মধ্যে চাঁদের বুকে নামার কথা রয়েছে চন্দ্রযানটির।
এ চন্দ্রযানের মাধ্যমে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে নামতে যাচ্ছে ভারত। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পারে।
এই অভিযান সফল হলে, আমেরিকা, রাশিয়া, চীনের পর ভারতই হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যাদের পাঠানো মহাকাশযান চাঁদের বুকে নামবে। আর এই অভিযান সফল হলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি রোবটযান নামাতে সক্ষম হবে। চাঁদের ওই অংশ এখনও খুব কমই জানে মানুষ।
ইসরোর এই চন্দ্রযানের কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট। যা চন্দ্রযানটিকে শক্তি জোগাবে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ঠেলে দেবে। এলভিএম-৩ হলো একটি ত্রিস্তরীয় উৎক্ষেপণ যান।
এর আগে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ এবং চন্দ্রযাত্রায় এই এলভিএম-৩ ব্যবহৃত হয়েছে। একে ভারতীয় রকেটের ‘বাহুবলী’ বলা হয়। এর মধ্যে দুটি স্তরে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে তরল জ্বালানি রয়েছে। কঠিন জ্বালানি ১২৭ সেকেন্ড ধরে জ্বলে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে তরল জ্বালানি। যা ২০৩ সেকেন্ড ধরে রকেটটি চালনা করে।
এই মহাকাশযান তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার- এই তিনটি অংশ নিয়ে। এটি ভারতের তৃতীয় চন্দ্রাভিজান। চাঁদে পৌঁছানোর চেষ্টায় এর আগে দুটো অভিযান চালিয়েছে ভারত।
৩ হাজার ৯০০ কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ বানাতে খরচ হয়েছে ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রুপি (সাড়ে ৭ কোটি ডলার)। ইসরোর প্রতিষ্ঠাতার নামে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে বিক্রম, যার ওজন প্রায় দেড় হাজার কেজি। ওই বিক্রমই বহন করবে ২৬ কেজি ওজনের রোভার বা রোবটযান প্রজ্ঞানকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।