জুমবাংলা ডেস্ক : নদীতে ইলিশ মাছের আধিক্যের কারণে বরিশাল বিভাগের জেলেরা বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। নিষেধাজ্ঞা না মেনে তারা ইলিশ শিকারে নদীতে নেমে পড়ছেন। তাই আভিযানিক দলের ওপর হামলা করতেও পিছু হটছেন না।
মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, এ বছর ইলিশ মৌসুমের সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা সাগরে গিয়ে মাছ তেমন একটা শিকার করতে পারেননি। অন্তত ৬০ ভাগ মাছ কম ধরা পড়েছে। ওই সব মাছ এখন নদীসহ সাগর মোহনায় চলে এসেছে। এ কারণে নদীতে প্রচুর ইলিশ রয়েছে। জেলেরা জাল ফেললে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। তাই জেলেরা কোনো বাধা মানতে চাইছেন না।
বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর থেকে বরিশালে তিনবার, পটুয়াখালীতে তিনবার, ভোলা ও বরগুনায় একবার করে মৎস্য কর্মকর্তার ওপর হামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলেদের আসামি করে মামলাও হয়েছে। তবু তারা থামছেন না। আভিযানিক দল দেখলেই হামলার চেষ্টা করেন।
উপ-পরিচালক বলেন, ‘আমাদের এবারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মেঘনা নদী। সেখানে মাছ বেশি ডিম ছাড়ে। মেঘনায় মৎস্য বিভাগের তৎপরতা বেশি। সেখানে অভিযানের শুরু থেকে অন্তত সাতটি স্পিডবোট নিয়ে টহল দেওয়া হচ্ছে।’ ছোট ছোট নদীতে মাছ শিকার হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, বতর্মানে মেঘনায় জাল ফেললেই একেকটি জালে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ কেজি ইলিশ মাছ উঠছে। ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলেও ৩০-৪০ হাজার টাকা হয়। স্থানীয় নেতারাও একটি সিন্ডিকেট করেছেন।
তাদের জন্য জেলেরা বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। হিজলা উপজেলার বাসিন্দা সেলিম রাঢ়ী জানান, মেঘনার শাখা নদীতে কোষা নৌকা দিয়ে ইলিশ শিকার হয়। তারা জাটকা সাইজের মাছ ২০০ টাকা হালি বিক্রি করেন। এ ছাড়া মাঝারি সাইজের ইলিশ প্রতি হালি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার ও কেজির ওপরে সাইজের প্রতি হালি ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেন। সদর উপজেলার চরবাড়িয়া গ্রামের মাছ বিক্রেতা জাকির হোসেন জানান, জেলেরা মাছ নিয়ে নদীর তীরে আসার সঙ্গে সঙ্গে শহর থেকে ক্রেতারা এসে কিনে নিয়ে যান। যার কারণে নিষিদ্ধ সময়েও ইলিশ মাছের দাম বেশি। তিনি জানান, গতকাল জাটকা সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ৫০০ ও কেজি সাইজের ১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মৎস্য দপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল পর্যন্ত ২৫৮ জেলেকে কারাদ দেওয়া হয়েছে। মামলা করা হয়েছে ৪৭৬টি। এ ছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে ১১ হাজার ২৩২ কেজি ইলিশ ও ৬৬ হাজার ৫৩৭ মিটার কারেন্ট জাল।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৩০ জন জেলে রয়েছেন। মা ইলিশ রক্ষায় শিকার নিষিদ্ধ সময়ে তাদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।