জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইটের ভাড়া রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রমজান ও ঈদ উপলক্ষে দেশে ফিরতে ইচ্ছুক মালয়েশিয়া প্রবাসীরা। অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে টিকিট কিনে আর্থিক সংকটে বহু প্রবাসী। তাদের দাবি, এই রুটে দ্রুতই যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণে যেন উদ্যোগ নেয় এয়ার লাইন্সগুলো।
বিদেশের মাটিতে নানা চড়াই উতড়াইয়ের মধ্যে প্রবাসীদের মন পড়ে থাকে দেশে প্রিয়জনের কাছে। তাই কাজের ফুরসতে দেশে ফিরতে উদগ্রীব থাকেন প্রত্যেকেই। তবে এবার কঠিন হয়েছে সে পথ। কারণ বেড়েছে কুয়ালালামপুর টু ঢাকা রুটের বিমান ভাড়া। তাই প্রয়োজনে দেশে ফিরতে অনেকেই পড়ছেন আর্থিক টানাপড়েনে।
কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা ও ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর, দু’দিকের ভাড়া এখন ভেঙেছে অতীতের সব রেকর্ড। এই অবস্থায় উড়োজাহাজের টিকেট কাটতে যেয়ে বিপাকে সাধারণ প্রবাসীরা। বেশি ভাড়া বেড়েছে ঢাকা থেকে যাওয়ার বেলায়। যাওয়া-আসায় আগে ভাড়া ছিল ১৯শ’ রিঙ্গিত অর্থাৎ ৪৮ হাজার টাকা। এখন শুধু যেতেই লাগছে ২৫শ’ রিঙ্গিত অর্থাৎ প্রায় ৬৪ হাজার টাকা। দুই দিকের হিসেব করলে তা লাখ ছাড়িয়েছে।
মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশি প্রবাসী বলেন, আমার মতো অনেকেই আছে যারা শুধুমাত্র টিকিটের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশে যেতে পারে না।
আরেকজন বলেন, আমি সারামাস কাজ করে যদি আয় করি মাত্র ১৮শ’ রিঙ্গিত, সেখানে শুধু যাওয়ার জন্য টিকিটের দাম যদি হয় ২৫শ’ রিঙ্গিত তাহলে আমি কিভাবে দেশে যাবো। টিকিটের দাম বেশি হওয়ার কারণে আমি দেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও আবার বাতিল করেছি।
অভিযোগ আছে, একটি চক্র তাদের পকেট ভারি করছে প্রবাসীদের পকেট কেটে। এ অবস্থায় টিকিটের ব্যয় মিটিয়ে দেশে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আর্থিক সংকটে বহু প্রবাসী, কেউ কেউ বাদ দিয়েছেন ছুটি কাটাতে দেশে ফেরার পরিকল্পনাই।
বেশি অর্থ দিয়ে টিকেট কেনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। আনুষঙ্গিক খরচ মিটিয়ে খুব কম অর্থ নিয়েই দেশে ফিরছেন প্রবাসীরা। মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া বাড়ায় প্রভাব ফেলেছে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা খাতেও। কুয়ালালামপুরের ট্রাভেল এজেন্সি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগের তুলনায় টিকেট বিক্রি কমেছে প্রায় অর্ধেক। সংকট উত্তরণে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী মোকাম্মেল হোসেন বলেন, খরচ তোলাটাই আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারণ, এখন যারা প্রবাসী আছে তারা বেতন পান ১৫শ’ রিঙ্গিত থেকে দুই হাজার রিঙ্গিত। ঈদের সময় তারা একটু দেশে যাবে কিন্তু আমরা সারাদিনে একটা দুইটা টিকিটও বিক্রি করতে পারছি না। কারণ, খুব দরকার না পড়লে কেউ দেশে যেতে পারছে না।
ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী মি. মুন্না বলেন, এই সংকট থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে ফ্লাইট বাড়ানো। সরকার যদি পদক্ষেপ নেয় ফ্লাইট বাড়ানোর এবং অল্প খরচে প্রবাসীদের এয়ারলাইন্স পাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার তাহলে ভালো হয়।
টিকিটের এই ভাড়ার ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করেছে মালয়েশিয়ার প্রবাসী অধিকার পরিষদ। সাধারণ প্রবাসীদের অনুরোধ, তাদের এই যাত্রা সহজ করতে অচিরেই ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে উদ্যোগ নেবে এয়ারলাইন্সগুলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।