জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘদিনের টানা নিম্নমুখিতা কাটিয়ে দেড় মাস ধরে দেশের শেয়ার বাজারে সূচকে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যাচ্ছে। এ সময়ে শেয়ার বাজারে সূচক বেড়েছে প্রায় ৪৫৩ পয়েন্ট। পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। সূচকের এই উত্থানে ব্যাংক খাতের শেয়ার উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। গত দুই মাসে শেয়ার বাজারে ব্যাংক খাতের ২ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে চারদিন শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা দিয়েছিল। এরপর থেকে টানা দরপতনের মধ্যে ছিল বাজারটি। ২০২৩ সালের ১২ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২৮ মে পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচক ১,৪০০ পয়েন্ট হারায়। তবে এরপর গত ২৯ মে থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দেড় মাসে সূচকটি ৪৫৩ পয়েন্ট বেড়েছে।
এই সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ডিএসইতে ব্যাংক খাতের দুই মাসের লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২,৫৫৬ কোটি টাকা। গড়ে প্রতি সপ্তাহে ২৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ব্যাংক খাতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে গত সপ্তাহে—প্রায় ৪৪৯ কোটি টাকা।
শুধু দুই মাসই নয়, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ডিএসইতে ব্যাংক খাতের ৫,৯৪২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৪৮০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির নাজুক অবস্থার কারণে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর কিস্তি ছাড় নিয়ে অনিশ্চয়তা, বৈদেশিক রিজার্ভের সংকট, ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বাজার ছিল অস্থির। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রিজার্ভে উন্নতি, আইএমএফ কিস্তি ছাড় এবং জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।
তাছাড়া ব্যাংক খাতের শেয়ার দীর্ঘদিন অবমূল্যায়িত ছিল। কিছু শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফা করায়, বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। ব্যাংক খাতের সংস্কারে বিভিন্ন উদ্যোগ বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়েছে।
তবে বাজারে কিছু লসপ্রদ ও দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, যা ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের নতুন করে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে শেয়ার বাজারের সামগ্রিক পারফরম্যান্স হতাশাজনক ছিল। এ সময়ে ডিএসইএক্স সূচক ৭.২ শতাংশ কমেছে, দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৩৯ শতাংশ। সিরামিক খাত ছাড়া বাকি প্রায় সব খাতেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
বহুজাতিক ও বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারে রিটার্নও ঋণাত্মক ছিল। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
মাসওয়ারি বিদেশি বিনিয়োগ ছিল:
জানুয়ারি: ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার
ফেব্রুয়ারি: ২ কোটি ২০ লাখ
মার্চ: ১ কোটি ৪০ লাখ
এপ্রিল: ৩ কোটি ৫০ লাখ
মে: ৪ কোটি ১০ লাখ
জুন: ২ কোটি ৩৪ লাখ ডলার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।