আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়েছে। এদিন লেনদেনের এক পর্যায়ে এক আউন্স স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম ওঠে ২ হাজার ৩২৯ দশমিক ৭০ ডলারে।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) প্রতিবেদন লেখার সময় স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম অবস্থান করছে ২ হাজার ৩২৭ দশমিক ৬০ ডলারে। প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম একদিনে ৩৬ দশমিক ৯০ ডলার বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে বিশ্ববাজারে কেনাবেচা চলছে।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল লেনদেনের এক পর্যায়ে প্রতি আউন্স স্পট গোল্ডের দাম রেকর্ড ২ হাজার ২৯৪ দশমিক ৯৯ ডলারের উঠে যায়। পরে অবশ্য দাম স্থির হয় ২ হাজার ২৯২ দশমিক ৩১ ডলারে। ইউএস গ্লোল্ড ফিউচার ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে স্থির হয়েছে ২ হাজার ৩১৫ ডলারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে মার্চ মাসে স্বর্ণের দাম প্রায় ৮ শতাংশ বেড়েছে। যা ২০২২ সালের নভেম্বরের পর একক মাসে সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধির রেকর্ড।
বিশ্বাবাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজারেও রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ। বর্তমানে সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের ভরি বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪ টাকায়। যা গত ২২ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দেয়ায় বাড়ছে স্বর্ণের দাম। পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক কারণেও নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে মানুষ ঝুঁকছেন স্বর্ণের দিকে।
এদিকে, চলতি বছর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন বিশ্লেষকরা। এবার সেটিই সত্যিই হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ও বাজুস সহসভাপতি মাসুদুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির সমস্যা চলছে। যা স্বর্ণের দাম বাড়ার পেছনে একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। মূলত মূল্যস্ফীতি বাড়লে অর্থের মান কমে যায়। তখন স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়ে।
বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে মাসুদুর রহমান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ যখন সুদের হার বাড়ায় তখন স্বর্ণের দাম কমে যায়। কারণ ডলারের প্রতি মানুষ তখন ঝুঁকে যায়। ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। সুদহার কমলে বিশ্ববাজারে আরও বেড়ে যাবে স্বর্ণের দাম।
এছাড়া ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন জানিয়ে মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখন ডলারের বদলে স্বর্ণ মজুতকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে বাড়ছে স্বর্ণের চাহিদা। আর চাহিদা বাড়ায় প্রভাব পড়ছে দামেও।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবিরও সুর মেলালেন বাজুস সহ-সভাপতির সঙ্গে। তিনি বলেন, সুদহার কমে গেলে মানুষ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণকেই বেছে নেয়। যার ফলে বাড়ে দাম।
আর বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও দাম সমন্বয় করা জরুরি হয়ে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, দাম সমন্বয় না করলে কম দামি স্বর্ণগুলো পার্শ্ববর্তী যেসব দেশে স্বর্ণের দাম চড়া, সেখানে পাচার হয়ে যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।