বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : দেশে ট্রু কলার, হুজকল, হাইয়া ইত্যাদির মতো ওয়্যারলেস কলার আইডি (ডব্লিউসিআইডি) সেবার অনাপত্তিপত্র নবায়নের বেলায় আপত্তি জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ওয়্যারলেস কলার আইডি (ডব্লিউসিআইডি) নামে এই সেবা দেওয়ার জন্য অনুমোদন পায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান এনরিচ টেকনোলোজি বাংলাদেশ। এই সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে অনাপত্তি গ্রহণ করে। যদিও আজ অবধি প্রতিষ্ঠানটি ওয়্যারলেস কলার আইডি (ডাব্লিউসিআইডি) সেবা চালু করতে পারেনি।
অনাপত্তিপত্রের নবায়ন ও ট্যারিফ অনুমোদনের জন্য বিটিআরসিতে আবেদন করলে আপত্তি ওঠে কমিশনের বিভিন্ন পক্ষ থেকে। বিটিআরসির একটি কমিশন বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। আলোচনায় কয়েকটি বিষয় উঠে আসে। অনাপত্তিপত্র নবায়ন করলে বা না করলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। ফলে বিষয়টি (অনাপত্তিপত্র) যাতে নতুন ধরনের কোনও জটিলতা তৈরি করতে না পারে সেকারণে ওয়্যারলেস কলার আইডি (ডব্লিউসিআইডি) সেবা পুনরায় নবায়নের বেলায় আরও সময় নিয়ে আলোচনার জন্য বিষয়টি তুলে রাখা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, এনরিচ টেকনোলজি বাংলাদেশ বিটিআরসিকে জানিয়েছে— বিশ্বের কয়েকটি কোম্পানি মোবাইল ব্যবহারকারীদের এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে এবং তা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে থাকে। এসব কোম্পানি মূলত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। এই সেবা দিতে এনরিচ টেকনোলজি বাংলাদেশ অ্যালোঙ্গা-ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। অনুমতি পাওয়ার পরও এনরিচ টেকনোলজি বাংলাদেশ এখনও দেশে এই সেবা চালু করতে পারেনি। যদিও পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ায় এনরিচ টেকনোলজি বাংলাদেশ ডাব্লিউসিআইডি সেবা চালু করেছে।
এই সেবা মোবাইলে চালু থাকলে কী হয়
ইনকামিং কলের সময় কলদাতার (কলার) নাম সেভ করা না থাকলেও রিয়েল টাইমে কলারের নাম মোবাইলে প্রদর্শন করা, অননেট এবং অফনেট উভয়ক্ষেত্রে কলদাতাকে চিহ্নিত করা, সেবাটি ব্যবহার করতে ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হয় না, ফিচার ফোন বা সব ধরনের মোবাইল সেটে এটি ব্যবহার করা যায়। ট্রু কলার, হুজকল, হাইয়া প্রভৃতি সেবার মতো এই সার্ভিসটি ব্যবহার করার জন্য মোবাইল ফোনে কোনও অ্যাপ ইনস্টল করার প্রয়োজন হয় না, নিবন্ধিত গ্রাহক চাইলে তার মোবাইল নম্বর কল গ্রহীতাকে প্রদর্শন করা থেকে বিরত রাখার সুবিধা ভোগ করতে পারে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিটিআরসির শীর্ষস্থানীয় ফোরাম কমিশন বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ওয়্যারলেস কলার আইডি (ডব্লিউসিআইডি) নামে টেলিকম ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যনিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হওয়া বা অন্যকোনও ধরনের আইনগত জটিলতা রয়েছে কিনা, এনরিচ টেকনোলজি বাংলাদেশ এই সেবা প্রদানের জন্য একটি অনির্ভরযোগ্য উৎস থেকে কলারের তথ্য সংগ্রহ করবে— এরফলে বিটিআরসি এ ধরনের অনির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করার অনুমতি প্রদান করলে কোনও ধরনের আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হবে কিনা এবং গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়া বা অন্যকোনও ধরনের আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বিধায় কমিশন থেকে জারি করা (১৯ মার্চ ২০২০ তারিখের) ওয়্যারলেস কলার আইডি টিভ্যাস হিসেবে বিবেচিত না হলে এর অনাপত্তিপত্রটি নবায়ন না করার ক্ষেত্রে কোনও আইনগত বাধা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য পরবর্তী বৈঠকে আবারও বিষয়গুলো তোলার বিষয়ে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচয় না প্রকাশের শর্তে বিটিআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এটাতে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বলে আর কিছু থাকে না।
তিনি আরও বলেন, এটা ট্রু কলারের মতো একটা সেবা বলে মনে হচ্ছে। এসব সেবাকে কখনও নেটওয়ার্কে অ্যালাউ করা উচিত নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যে প্রতিষ্ঠান এই সেবা দেবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক তাদের ওখানে নিবন্ধন করলে তারা গ্রাহকের অ্যাড্রেস বুকের সব একসেস নিয়ে নেবে। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।