ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী কর্মজীবী মানুষ, পাটুরিয়ায় যাত্রীদের ভিড়

সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : ঈদের আনন্দ শেষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে রাজধানীমুখী কর্মজীবী মানুষের ঢল নেমেছে। রোববার থেকে অফিস খুলছে বলে শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকেই অনেকে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট হয়ে রাজধানীর পথে যাত্রা করছেন।

পাটুরিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, ফেরি ও লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পাড়ি দিয়ে মানুষ পাটুরিয়ায় আসছেন। বিশেষ করে মোটরসাইকেল আরোহীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই লঞ্চগুলো ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে ঘাটে পৌঁছায়।

বাগেরহাট থেকে ঢাকার সাভারে যাওয়ার পথে থাকা যাত্রী নুসরাত জাহান বলেন, “ভিড় একটু বেশি হলেও আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। নিরাপদেই লঞ্চ পার হচ্ছি।”

বাস চালক শরীফুল ইসলাম জানান, “অন্যান্য ঈদের তুলনায় এবার ফেরিঘাটে তেমন কোনো ভিড় বা বিশৃঙ্খলা হয়নি। গাড়িগুলো নির্বিঘ্নে পার হচ্ছে, যাত্রীরাও শান্তিতে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন।”

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ১৬টি ফেরি ও ১৮টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে বাড়তি ট্রিপ দিচ্ছে এসব ফেরি ও লঞ্চ।

এছাড়া মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটেও বাড়ছে যাত্রীর চাপ। পাবনার কাজিরহাট থেকে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীরা আরিচা ঘাটে এসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। পাবনা ও সিরাজগঞ্জ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য এই রুট বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

ফেরার পথে কোনো দুর্ভোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় যাত্রাপথে ছিল শৃঙ্খলা।

পাবনার যাত্রী জাহিদ হাসান বলেন, “ফেরার সময় অনেক ভোগান্তি হবে ভেবে চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। ঠিক সময়ে ফেরিতে উঠতে পেরেছি, শান্তিতে ঢাকা যাচ্ছি।”

বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম আব্দুস সালাম জানান, “আজ সকাল থেকে অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ একটু বেশি। তাই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ১৬টি ফেরির মাধ্যমে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। যেহেতু পাটুরিয়ায় চাপ কম, তাই ফেরিগুলোকে অপেক্ষা না করিয়ে সরাসরি দৌলতদিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নদীতে পানি ও স্রোত বাড়লেও পারাপারে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।”