জুমবাংলা ডেস্ক : সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে সুপারিশ তৈরির জন্য বিভিন্ন অংশীজনের লিখিত মতামত ও প্রস্তাব নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীদের কোনো পরামর্শ বা মতামত সংস্কার কমিশন নেবে না।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবিধান সংস্কারবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ এ কথা জানান।
তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা দল জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের সময় ‘সক্রিয়ভাবে’ হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থেকেছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নকে সমর্থন করেছে, ‘ফ্যাসিবাদী’ কার্যক্রমকে বৈধতা প্রদানে সাহায্য করেছে, কমিশন সেসব ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার প্রস্তাবের সুপারিশ তৈরিতে যুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তীব্র গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার বেশকিছু বিষয়ে সংস্কারে কমিশন গঠন করেছে। এর একটি সংবিধান সংস্কার কমিশন।
শুরুতে খ্যাতনামা আইনজীবী শাহদীন মালিককে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হলেও পরে তিনি সরে দাঁড়ান। এরপর দায়িত্ব দেওয়া হয় আলী রিয়াজকে, যিনি এর আগে সংবিধান নতুন করে লেখার কথা বলেছিলেন।
সংবিধান সংস্কার কমিশনকে ‘জনপ্রতিনিধিত্বশীল’ ও ‘কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের ক্ষমতায়ন’ নিশ্চিত করতে দেশের বিরাজমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
সংস্কারের পরিধি কী হবে- জানতে চাইলে আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সংবিধান পর্যালোচনাসহ জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের লক্ষ্যে সংবিধানের সামগ্রিক সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন, পরিমার্জন, পুনর্বিন্যাস এবং পুনর্লিখন করা হবে।
তিনি বলেন, সংস্কারের সুপারিশ তৈরির জন্য বিভিন্ন অংশীজনের লিখিত মতামত ও প্রস্তাব নেবে কমিশন। পাশাপাশি সংবিধান সংস্কারে সাধারণ জনগণের মতামত ও প্রস্তাব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।
সংবিধান সংস্কারের পর সেটি বাস্তবায়নও এই সরকারই করবে কি না- এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, এটি একেবারেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। শুধু ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে কমিশনে রাখা হয়েছে। সে হিসেবে আমি বলতে পারি, অবশ্যই এই সরকার করবে। কেন করবে না! এই সরকার ছাড়া কেউ এটি (বাস্তবায়ন) করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, মোহাম্মদ ইকরামুল হক, শরীফ ভূঁইয়া, আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিক, এম মঈন আলম ফিরোজী ও মো. মুসতাইন বিল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আলী রীয়াজের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এসময় সংবিধানকে সমসাময়িক করার পরামর্শ দেন এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।