আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের তিস্তা মহাপরিকল্পনায় আগ্রহ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং কালক্ষেপণ ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না এমন মন্তব্য নদী গবেষকদের। তাদের মতে যাদের তিস্তায় পানি দিতে অনিহা তারা এই প্রকল্পে কতটা আন্তরিক হবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে নদী অধিকার কর্মীরা বলছেন, চীন-ভারতে দ্বৈরথে এই প্রকল্প ঝুলে গেলে তৈরি হবে নানা প্রশ্ন। প্রয়োজনে তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠন করে নিজস্ব অর্থায়নে হলেও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তাদের।
পানির প্রশ্নে ভারতের আগ্রাসী নীতির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে তিস্তা পারের বাসিন্দারা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের। তিস্তা দুই পাড়ে ১১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন করেন দুই পাড়ের বাসিন্দারা। দাবি ছিল মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে বিদেশি বিনিয়োগ অথবা নিজস্ব অর্থায়নে।
২০১৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পাওয়ার চায়না যৌথ সমীক্ষা শেষ করে। আর এই প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে চীন।
তবে একই প্রকল্পে ভারতের কারিগরি দল পাঠানো ও নতুন করে সমীক্ষার প্রস্তাব, বিনিয়োগ এবং একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি বিরোধিতা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন।
এদিকে ২৭ জুন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাসান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, তিস্তা যেহেতু ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী। সেকারণে ভারত সহযোগিতা করলেই ভালো হয়।
তবে নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, যে দেশ তিস্তার পানি শোষণ করছে দীর্ঘ সময়, তিস্তাকে মেরে ফেলার সব আয়োজন করেছে। তাদের এমন প্রস্তাব শুধুমাত্র সময় ক্ষেপণ।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের পর এক তরফা পানি প্রত্যাহার করছে ভারত। যেখানে শুধু সই করলেই তিস্তা চুক্তি হয়ে যায়, সেখানে নতুন করে তিস্তা প্রকল্পে সমীক্ষা করতে কারিগরি টিম পাঠানো এই প্রকল্পকে বিলম্বিত করবে বলেও জানান তিনি।
আর তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানীর মতে, তিস্তা নিয়ে ভারত – চীনের রাজনীতি দেখতে চায়না তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা । প্রয়োজনে তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠন করে হলেও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, তিস্তা পাড়ের দুই কোটি মানুষ প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে তারা তাদের সাধ্যমতো সহায়তা করে হলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন চায়।
গবেষণা বলছে, গেল ১০ বছরে তিস্তা গিলেছে অন্তত ১০ লাখ কোটি টাকার সম্পদ। যার অন্যতম কারণ সংস্কারের অভাবে নাব্য হারিয়ে বুক উঁচু হয়েছে তিস্তার। ফলে অল্প পানিতেই সৃষ্টি হচ্ছে বন্যা ও ভাঙনের মতো দুর্যোগ। তবে তিস্তাপাড়ার বাসিন্দাদের প্রত্যাশা, ভূরাজনৈতিক শক্ত প্রতিকূলতার পাহাড় ডিঙিয়ে সূচিত হবে উত্তর জনপদের মানুষের স্বপ্নযাত্রা তিস্তা মহাপরিকল্পনা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।