জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় বোমা ফাটিয়ে অভিনব কায়দায় সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাতদলের মূলহোতাসহ গ্রেফতার ডাকাতদলের মূলহোতা ল্যাংড়া হাসান ওরফে হাসান জমাদ্দারসহ ছয়জনের মোট দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই ঘটনায় রিমান্ডকৃত অপর আসামিরা হলেন-ল্যাংড়া হাসানের সহযোগী মো. আরিফ (২৬), মো. আইনুল হক ওরফে ভোলা (৪২), মো. সাইফুল ইসলাম মন্টু (৪৫), মো. আনসার আলী (৫০) মো. শাহীন (৩৫)। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হকের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এদিন ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইয়াসিন শিকদার তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। পরবর্তীতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) তাদের রাজধানী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, পাঁচটি চাপাতি ও ডাকাতি শেষে পালিয়ে যেতে ব্যবহার করা প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, রাজধানী ঢাকা, কেরানীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের ভালুকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কায়দায় বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি করে আসছিল দুর্ধর্ষ আন্তঃজেলা ডাকাতদল। দলের মূলহোতা ল্যাংড়া হাসান ভারতে বসে সহযোগীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকার সোনার দোকান টার্গেট করতেন। এরপর ডাকাতির আগে তারা সেই দোকানের আশপাশে একটি বাসা ভাড়া নিতেন। পরবর্তীতে দলের সদস্যরা দোকানের আশপাশে রেকি করে প্রস্তুতি নিতেন। সবকিছু ঠিক হলে হাসান ভারত থেকে এসে দলে যোগ দেন। প্রথমে বোমা ফাটিয়ে ও গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ছয় থেকে সাত মিনিটের মধ্যে দোকানের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে আগে থেকে ঠিক করে রাখা গাড়িতে পালিয়ে যেতেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, এই চক্রটি ডাকাতির মালামাল কোথায় বিক্রি করে সে তথ্য আমরা পেয়েছি। আপনারা জানেন পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে কিছু চক্র রয়েছে যারা এসব মাল কিনে থাকেন। আমরা মালিক সমিতিকে অনুরোধ করবো এসব অসাধুচক্রকে প্রশ্রয় দেবেন না। তারা এসব মালামাল কেনার কারণেই দুর্ধর্ষ চক্র ডাকাতি করছে। আমরা অনেকের নাম পেয়েছি। আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনবো।
ডাকাতদলের মূলহোতা ও মাস্টারমাইন্ড ন্যাংড়া হাসানের টার্গেট সোনার দোকান উল্লেখ করে গোয়েন্দাপ্রধান আরো জানান, ২০০৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি করেন হাসান। তিনি ভারতে বসে পরিকল্পনা করে দেশে এসে ডাকাতি করতেন। এরপর ডাকাতি করে পাওয়া মালামাল ভাগাভাগি শেষে আবারও ভারতে পালিয়ে যেতেন। ২০১২ সালে চট্টগ্রামে একটি দোকানে ডাকাতি করতে গিয়ে পায়ে গুলি লাগে হাসানের। তার বিরুদ্ধে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ১৭টি মামলা রয়েছে।
ল্যাংড়া হাসান ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কোন প্রক্রিয়ায় ভারতে যেতেন জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ জানান, ন্যাংড়া হাসান ভারতে নাগরিক কার্ড করেছেন। তার পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন থেকে ব্লক করে রাখা। তাই তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পালিয়ে যেতেন। একইভাবে আবার ফিরে আসতেন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ডাকাতি করে আসছেন। তার আশ্রয়দাতাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। ভারতে তিনি কীভাবে নাগরিক হলেন সে বিষয় আমরা লোক পাঠিয়ে খোঁজ করবো। গ্রেফতার চক্রের সদস্যদের স্বীকারোক্তি উল্লেখ করে হারুন বলেন, চক্রটি হাসানের নেতৃত্বে সারাদেশে ২৫ থেকে ৩০টি ডাকাতি করেছে। এই ডাকাতির মাধ্যমে হাজার হাজার ভরি সোনা ছিনিয়ে নিয়েছে। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জ ডাকাতির পর ফেনীতে ডাকাতি করে। সেখানে ডাকাতির সময় একজনকে গুলি করে। সেই ব্যক্তি পরে মারা গেছেন। খিলগাঁও এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় রামপুরা থানায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
ভোট কেন্দ্রের সামনে সাংবাদিকের ওপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।