আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাতে তাপমাত্রা পারদ চড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। কিন্তু রেকর্ড চাহিদা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যটিতে নেই তেমন কোনো লোডশেডিং। ফলে এই তীব্র গরমে অন্তত বিদ্যুৎ ব্যবহারে স্বস্তি পাচ্ছেন রাজ্যবাসী।
তীব্র তাপপ্রবাহের জেরে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই বিদ্যুতের চাহিদায় তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড। তবে সেই চাহিদা মেটানোর মতো যথেষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।
গত শুক্রবার (২ জুন) পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এলাকাগুলোতে মোট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৯ হাজার ২৮ মেগাওয়াট, যা স্বাধীনতার পর থেকে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বছর একদিনে সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৭ হাজার ৮৩২ মেগাওয়াট।
কলকাতার পার্শ্ববর্তী শহর পানিহাটির বাসিন্দা সোমনাথ দাশ বলেন, একাধারে এয়ারকন্ডিশন (এসি), ফ্রিজ, ফ্যান চলছে। গরমের মধ্যে এই তিনটি জিনিস অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ফ্যান। অনেক বাড়িতে এসি নেই, তার ওপর ফ্যান যদি না চলে, আমরা শহরের মানুষ চলতে পারি না। বিদ্যুৎ চলে গেলে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, তবে সাম্প্রতিককালে দুই-একটি ঘটনা ছাড়া ঝড়-বৃষ্টি না হলে বিদ্যুৎ যায় না বললেই চলে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎ সেবায় আমরা সন্তুষ্ট।
বিদ্যুতের চাহিদা কীভাবে মেটাচ্ছে সরকার?
রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের মতে, এর মূল কারণ কয়লা উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গের স্বনির্ভরতা। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে এখন প্রতিদিন প্রয়োজনীয় কয়লার ৯০ শতাংশের বেশি আসে নিজস্ব ছয়টি খনি থেকে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এর পরিমাণ ১০০ শতাংশে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে সেভাবে নতুন কোনো বড় শিল্প গড়ে না ওঠায় কিছুটা সুবিধা মিলছে। এছাড়া সন্ধ্যা ও রাতে শপিংমলের মতো বাণিজ্যিক সংস্থা ও কৃষিকাজের গ্রাহকদের বাড়তি চাহিদা মেটাতে রাজ্যের বাইরে থেকে স্বল্পমেয়াদে কিছু বিদ্যুৎ আমদানিও করা হয়।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট প্রয়োজনীয় কয়লার ১০ শতাংশ বাধ্যতামূলক আমদানি করতে সম্প্রতি রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। মূলত বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে কয়লার জোগান বাড়ানোর লক্ষ্যে এই নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু আপাতত কয়লা আমদানির কোনো পরিকল্পনা নেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের।
প্রশাসন সূত্র বলছে, চড়া দামে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করলে বিদ্যুতের দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে। তাই নিজেদের খনিগুলো থেকেই কয়লা উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।