স্পোর্টস ডেস্ক : মহাপরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ১৯৮৩ সালে প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ পেয়েছিল ভারত। কপিল দেবের হাত ধরে আসা বিশ্বকাপের প্রথম ট্রফির পর দুই যুগ বিশ্বকাপের মুখ দেখেনি ভারত। ২০০৭ সালে ধোনির হাত ধরে ভাঙে ডেডলক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই শিরোপা ঘরে তোলে ভারত। আর তাতেই কাটে তাদের ২৪ বছরের শিরোপা খরা।
এরপর ২০১১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে ভারত। সেই বিশ্বকাপটি ছিল ঘরের মাটিতে।
২০১১ বিশ্বকাপের পর দুর্ভাগ্য যেন ঘাঁটি গেড়ে বসে ভারত দলের ওপর। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এবং ২০২১ ও ২০২৩ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে শিরোপা জয়ের দিক থেকে ফেভারিট হিসেবে থাকলেও হারকে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। তবে এর ভেতর অর্জনও রয়েছে ভারতের। সেটি হলো ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটি।
এক যুগের শিরোপা খরা মেটানোর বড় সুযোগ আসছে চলতি বছরের অক্টোবরে। কেননা ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে ভারত। আর এটিকেই শিরোপা খরা কাটানোর বড় সুযোগ মানছেন সাবেকরা।
বিশ্বকাপের আসন্ন আসরের ম্যাচগুলো হবে ১০টি ভেন্যুতে। সেগুলো আবার ১০টি ভিন্ন শহরতে। ভিন্ন ভিন্ন শহরে হওয়াতে স্বভাবতই দলগুলোকে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ধকল কিছুটা বেশিই পোহাতে হবে।
তবে স্বাগতিক দেশ হওয়ার পরও সবেচেয়ে বেশি ধকল পোহাতে হবে ভারতকে। গ্রুপ পর্বের ৯ ম্যাচ তাদের খেলতে হবে ৯টি ভিন্ন শহরে। দূরত্বের হিসাবে গ্রুপ পর্বের ৩৪ দিনে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের ভ্রমণ করতে হবে প্রায় ৮ হাজার ৩৬১ কিলোমিটার পথ।
গ্রুপ পর্বের বাধা পেরিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করলে দূরত্ব বাড়বে আরও। সেমিফাইনাল, ফাইনালসহ তখন মোট ৪২ দিনে ১১ ম্যাচ খেলতে স্বাগতিকদের পাড়ি দিতে হবে সর্বসাকুল্যে ৯ হাজার ৭০০ কিলোমিটার পথ।
আসন্ন বিশ্বকাপে ভারত নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে ৮ অক্টোবর। চেন্নাইয়ে হবে এই ম্যাচটি। দুদিন বিরতি দিয়ে ১ হাজার ৭৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দিল্লিতে আফগানিস্তানের সামনা করবে স্বাগতিকরা।
এরপর আবার দুদিনের বিরতি। ১৪ অক্টোবর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা লড়বে আহমেদাবাদে। দিল্লি থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে।
নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ১৯ অক্টোবর ভারত লড়বে বাংলাদেশের বিপক্ষে। পুনেতে হবে ম্যাচটি। আর এই ম্যাচ খেলতে ভারতীয়দের পাড়ি দিতে হবে ৬৫৭ কিলোমিটার পথ।
গ্রুপ পর্বের শেষ পাঁচ ম্যাচে কোহলি-রোহিতদের ভ্রমণ করতে হবে মোট ৮ হাজার ২৬ কিলোমিটার পথ। ভেন্যু থেকে ভেন্যু হিসেবে দূরত্বটা দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৮৮৪ কিলোমিটার (পুনে থেকে ধর্মশালা), ১ হাজার ৬ কিলোমিটার (ধর্মশালা থেকে লখণৌ), ১ হাজার ৩৭৬ কিলোমিটার (লখণৌ থেকে মুম্বাই), ১ হাজার ৮৮৬ কিলোমিটার (মুম্বাই থেকে কলকাতা) ও ১ হাজার ৮৭৪ কিলোমিটার (কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোর)।
স্বাগতিকদের এমন দীর্ঘ ভ্রমণের বিষয়টিতে বেশ চটেছেন ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ এনে দেওয়া কপিল দেব। দ্য উইককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ভারতকে ১১ ম্যাচ (ফাইনালে উঠলে) খেলতে হবে। ভাবুন, ওদের কী পরিমাণ ভ্রমণ করতে হবে…এই সূচি কে বানিয়েছে?’
এখন পরিস্থিতি বিবেচনায় বলাই যায়, নিজেদের বানানো সূচি নিজেদেরই গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।