ধর্ম ডেস্ক : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। শান্তি ও আশীর্বাদ বর্ষিত হোক তাঁর প্রতি যিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। যিনি মানবজাতির শিক্ষক এবং অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। সালাত ও পূর্ণাঙ্গ সালাম তাঁর ওপর বর্ষিত হোক। হে আমাদের প্রতিপালক। আসন্ন রমাদানে আমাদের হৃদয় প্রশস্ত করে দিন, আমাদের কাজ সহজ করে দিন, আমাদের জবান ও অন্তর থেকে কুপ্রবৃত্তি ও সব রকম জটিলতা দূর করে আমাদের নেককার বান্দায় পরিণত হওয়ার সুযোগ করে দিন।
আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে আল্লাহর একটি মহান আয়াত যেটি মানবজাতির জন্য সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক আয়াত হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে, সেই আয়াতের প্রতি গুরুত্বসহকারে আমাদের গভীর মনোযোগ দেওয়া আবশ্যক। আমরা অনেকেই আয়াতটি অনেকবার পড়ি ও শুনে থাকি। কিন্তু খুব কম মানুষই এর গভীরে যায় আল্লাহ যাদের প্রতি রহম করেছেন তারা ছাড়া, আসুন আমরা এই আয়াতের গভীরে যাই এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি আমাদের তাঁর বাণীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রদত্ত পুরস্কার দান করেন। আল্লাহ সুবহানুতায়ালা বলেন, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর সীমা লঙ্ঘন করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত প্রাপ্তি থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়, দয়ালু (সুরা- জুমার-৫৩)।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আমরা পুরুষ-নারী বা যে পর্যায়ের ব্যক্তি হই না কেন! আসুন আমাদের হৃদয়কে এই আয়াতের সঙ্গে একীভূত করি। আল্লাহ বলেছেন, হে আমার বান্দাগণ! যারা সীমা লঙ্ঘন করেছ! এখানে আহ্বানকারী হচ্ছেন স্বয়ং আল্লাহ যিনি পরিপূর্ণভাবে অমুখাপেক্ষী আর আহ্বান প্রাপ্ত আমরা তাঁর বান্দা যারা তাঁর মুখাপেক্ষী ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলছেন, তোমরা গুনাহ করতে করতে সীমা অতিক্রম করেছ।
আমরা মানুষ যদি কেউ অপরের প্রতি বারবার ভুল করি তবে সে আপনার আমার দিকে আর ফিরে তাকাতে চান না বরং আপনাকে/আমাকে দেখলে তার সঙ্গে কৃত ভুলগুলো তার মনে পড়ে এবং দ্বিগুণ ঘৃণায় দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু আল্লাহতায়ালা এর উল্টো! আল্লাহ সুবহানুতায়ালা আমরা গুনাহগার হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমাদের প্রতি ¯ন্ডেœহপূর্ণ কোমল ভাষায় আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, যারা সীমা লঙ্ঘন করেছ : তিনি কি বলেছেন – হে ব্যভিচারী, হে অপরাধী, হে মাদকাসক্ত, হে মদ্যপায়ী, হে অমুক পাপী… না। তিনি বলেছেন হে আমার বান্দারা এখানে আমাদের সবাইকে তওবার দিকে এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব কেউ নিরাশ হইও না। তাই সুবর্ণ সুযোগ এসেছে আসন্ন রমাদানে আমরা নারীপুরুষনির্বিশেষে সবাই তওবার আহ্বানে সাড়া দিই। নিজেরা জানি এবং অন্যদের জানিয়ে দিই আল্লাহ আশা হারাতে নিষেধ করেছেন। তাঁর দিকে ফিরে যেতে আহ্বান করছেন। এক্ষণে আমরা আর কালক্ষেপণ করব না- আমি আপনি যত পাপই করি না কেন!
ছোটবড় যা-ই হয়ে থাকুক না কেন? আমরা তওবা করি আন্তরিক তওবা। পাপ কাজ ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি অতীত পাপের জন্য অনুতপ্ত হই এবং ওই পাপের দিকে পুনরায় আর যাব না এই মর্মে দৃঢ় সংকল্প করি, কারোর অধিকার কেড়ে নেওয়া হলে তা ফিরিয়ে দিই। আমরা যেন না বলি আমাদের অনেক পাপ হয়েছে, অনেক অনেক বড় পাপ হয়েছে, আল্লাহ কি ক্ষমা করবেন! আল্লাহ কি আমাদের তওবা কবুল করবেন। আল্লাহ কি আমাকে পাপ ছাড়ার ক্ষমতা দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর বাণী অভ্রান্ত। আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন। তিনি এ ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি বলেননি একটি, দুটি, তিনটি, চারটি… তিনি সমস্ত পাপের বার্তা দিয়েছেন। তাই আসুন মন দিয়ে পাঠ করুন আস্তাগফিরুল্লাহ! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ। অবশ্যই তিনি আমাদের পাপ মোচন করবেন। আমাদের পাপগুলো নেকিতে পরিবর্তন করে দেন। কত মহান আল্লাহ, কত দয়ালু আল্লাহ কত দয়াবান। কিন্তু আমরা কি তাঁর এই মহানুভবতার মূল্যায়ন করছি! আমরা কি তাঁর অসীম রহমতের কদর করছি। আল্লাহ মানুষকে দুর্বল প্রকৃতির করে সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী, পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।
ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ ‘বাইবিট’ থেকে ১.৫ বিলিয়ন ডলার চুরি !
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, আল্লাহর সঙ্গে যারা শিরক করে, ব্যভিচার করে, বড় বড় গুনাহ করে এবং এগুলো যারা করবে তারা তাদের নির্ধারিত শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে সেখানে তারা অপমানিত হয়ে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে এবং তারপরও আল্লাহ ব্যতিক্রম ঘোষণা করে বলেছেন, তবে যে তওবা করে ইমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন তিনি ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময় (ফুরকান-৬৯-৭০)। কারণ মানুষ যখন তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে তখন শুরু হবে নতুন অধ্যায়। কাজেই আমরা তওবা করে সাহসী হই আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য তিনি আমাদের পথ দেখাবেন। সাহসী হওয়ার ক্ষমতা দেবেন। সব পাপ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর রাহে একটি নতুন জীবন শুরু করি। এই । আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর অভিমুখী হওয়ার তওফিক দান করুন, আমিন।
লেখক : সৈয়দ নজরুল ইসলাম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।