ধর্ম ডেস্ক : রমজান মাস ইবাদত ও আত্মশুদ্ধির মাস। এ মাসে মুসলমানরা অন্যান্য ব্যস্ততা কমিয়ে বেশি সময় ইবাদতে কাটানোর চেষ্টা করেন। বিশেষ করে নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও তারাবির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
নামাজের গুরুত্ব ও জামাতে আদায়ের ফজিলত
নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি নামাজ সঠিকভাবে আদায় করা হয়ে থাকে, তবে সে সফলকাম হবে। আর যদি নামাজ নষ্ট হয়ে থাকে, তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (নাসায়ি)
রমজানে অনেক মুসলমান নামাজ আদায় করলেও অনেকে জামাতে নামাজের গুরুত্ব দেন না। অথচ জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব অনেক বেশি। রাসুল (সা.) বলেন, ‘জামাতে নামাজ পড়া একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি মর্যাদার।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৫, মুসলিম, হাদিস : ৬৪০)
রাসুল (সা.) জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে জামাতে নামাজ আদায় করে না, আমি তার ঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪২০)
রমজানে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব
রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। হাদিসে এসেছে, ‘প্রতি রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও জিবরাইল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। মৃত্যুর বছর রাসুল (সা.) জিবরাইল (আ.)-কে দুইবার কোরআন তিলাওয়াত করে শোনান।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৮৫)
তাই রমজানে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত প্রতিদিন অন্তত এক পৃষ্ঠা কোরআন তিলাওয়াত করা এবং তা বোঝার চেষ্টা করা।
তারাবি নামাজ ও কদরের রাতের ইবাদত
রমজানের অন্যতম বিশেষ ইবাদত হলো তারাবি নামাজ। এশার নামাজের পর তারাবি নামাজ আদায় করা হয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি : ২০৪৭)
এছাড়া, রমজানের শেষ দশকের মধ্যে এক রাত লাইলাতুল কদর, যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রোজা রাখে, তারাবি নামাজ পড়ে এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (মিশকাত, হাদিস : ১৮৬২)
রমজান মাসের ইবাদত-বন্দেগি আত্মশুদ্ধির সুযোগ এনে দেয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো এবং নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে আরও পরিশুদ্ধ করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।