জুমবাংলা ডেস্ক : জ্যৈষ্ঠের শুরুতে রাজধানীর ছোট-বড় বাজারে রসালো ফলে ভরপুর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। আম, কাঁঠাল, লিচু, তালশাঁস, আনারস, জামরুলসহ নানান মৌসুমি ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। মৌসুম শেষের দিকে থাকলেও বেল, বাঙ্গি ও তরমুজও এখনও বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
Table of Contents
রাজধানীর বাজারে রসালো ফলের সরবরাহ
শুক্রবার (১৬ মে) মিরপুর, পল্লবীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের নজর কাড়ছে গ্রীষ্মকালীন এসব ফল। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা আম ও লিচুর। সাতক্ষীরা, যশোর ও রাজশাহী থেকে আসা বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা প্রতি কেজি দরে। অন্যদিকে, লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা প্রতি শত। কালোজাম প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি তাল ৩০ টাকা এবং আনারস ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাড়া-মহল্লা ও ফুটপাতে মৌসুমি ফলের রমরমা
নগরীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও ফুটপাতে ছোট ব্যবসায়ীরা ভ্যানে করে এসব মৌসুমি ফল বিক্রি করছেন। সাধারণ মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে যাওয়ার জন্যই এ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ফলের বর্তমান বাজারদর
বাজার ঘুরে দেখা গেছে,
- হিমসাগর আম: ৮০-১২০ টাকা/কেজি
- গোবিন্দভোগ: ১২০ টাকা/কেজি
- গোপালভোগ: ১০০ টাকা/কেজি
- গুটি আম: ৮০ টাকা/কেজি
- যশোরের লিচু (১০০ পিস): ৩৮০-৪০০ টাকা
- রাজশাহীর বোম্বে লিচু: ৫০০-৫৫০ টাকা
অন্যান্য ফলের মধ্যে:
- ডালিম: ৪০০-৪৫০ টাকা/কেজি
- সাদা আঙুর: ২০০-২৫০ টাকা/কেজি
- কালো আঙুর: ৪০০-৪৫০ টাকা/কেজি
- মাল্টা: ২০০-২৩০ টাকা/কেজি
- আপেল: ২৮০-৩৫০ টাকা/কেজি
বাজারে পাকা কাঁঠালের সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম। তবে সবজি হিসেবে কাঁচা কাঁঠালের চাহিদা রয়েছে।
ফল ব্যবসায়ীদের অভিমত
সকালে পল্লবীর একটি ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়, যেখানে বেশিরভাগই আম কিনছেন।
ফল বিক্রেতা আনসারি আহমেদ বলেন,
“সারাদেশ থেকে আম আসছে। আমের দামও কম। সব ধরনের আমের বিক্রি ভালো। এখন সাতক্ষীরার আম আসছে বেশি।”
আরেক বিক্রেতা মাহফুজ বলেন,
“বাজারে যে লিচুগুলো আসছে সেগুলো আকারে কিছুটা ছোট। আগামী সপ্তাহ থেকে বড় লিচু আসবে, দামও কিছুটা কমবে। পাকা কাঁঠালের বড় অংশ আসে গাজীপুর ও সাভার থেকে। আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ বাড়বে।”
দেশি ফলের জনপ্রিয়তা ও বিদেশি ফলের চাহিদা কম
রায়ানখোলা বাজারের ফল বিক্রেতা মাসুদ আলম জানান,
“এখন মানুষ আম-কাঁঠাল খাবে। এটা অন্তত এক থেকে দুই মাস চলবে। রোগীদের জন্য অনেকে মাল্টা, আপেল কিনছেন। তবে বাসায় খাওয়ার জন্য বা প্রতিবেশীর বাড়িতে উপহার হিসেবে আম, লিচু নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে।”
ক্রেতাদের দৃষ্টিতে ফলের দাম
মিরপুর-১ নম্বর বাজারে ক্রেতা শাহীন আলম বলেন,
“দেশি ফলের দাম নাগালের মধ্যে। স্বাদও ভালো। বিদেশি ফল কিনে খাওয়ার সামর্থ্য হয় না অনেকের। আমাদের জন্য আম, কাঁঠাল এখন আশীর্বাদ।”
আরেক ক্রেতা জানান,
“আম-লিচুর দাম সহনীয় হলেও দেশি অন্য ফলের দাম কিছুটা বেশি।”
রাকিব হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন,
“দেশি পেয়ারা এখন ১০০ টাকা কেজি, কালোজাম ৪০০ টাকা কেজি। এসব ফলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ বাড়ানো প্রয়োজন।”
বর্তমানে রাজধানীর বাজারে দেশি রসালো ফলের সরবরাহ ও দাম সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। গ্রীষ্মের শুরুতেই আম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি ফলের চাহিদা তুঙ্গে। দেশি ফলের স্বাদ ও মূল্যমানের কারণে বিদেশি ফলের বাজার কিছুটা থমকে গেছে। তবে মৌসুমী ফলের চাষাবাদ ও সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে আগামীতে আরও সাশ্রয়ী দামে এসব ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।