আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানীয় সামরিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপট যেন দ্রুত বদলে দিচ্ছে। শুধু নিজেদের ক্ষমতা দেখানো নয়, বরং এক নিত্যনতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে। ইরানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা যেন পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক শক্তিশালী, যা গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক ভারসাম্যকে বদলে দিতে পারছে। এই প্রেক্ষাপটে ইরানের সামরিক ও কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে বিশ্লেষকদের চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে, আর দুনিয়ার নজর রয়েছে এই শক্তিশালী পরাশক্তির দিকে।
ইরানের সামরিক শক্তি: জানুন বিস্তারিত
ইরানের শক্তিমত্তা মধ্যপ্রাচ্যে কেবল সামরিক খাতে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি প্রযুক্তিগত দিক থেকেও অনেক এগিয়ে গেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে যে, ইরান বর্তমানে ৮৩.৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা অর্জন করেছে, যা পরমাণু বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান যে কোন মুহূর্তে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সহ পশ্চিমা বিশ্ব যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। ইরান নিজেও জানিয়েছে যে তারা নিজস্ব নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত এবং এ ক্ষেত্রে কোনও আঘাত এলে তারা পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধা করবে না।
ইরান এখন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তার সামরিক শক্তিকে আরও বৃদ্ধি করেছে। আকাশে উড়ছে এআই চালিত ড্রোন এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রতিটি কৌশলগত চলাচলের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এমনকি তাদের সেনাবাহিনীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারও লক্ষণীয়। ইরানের সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, তাদের সেনাবাহিনী এখন আধুনিক এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠেছে। এই প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও সামরিক সক্ষমতা ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছে।
রাশিয়া ও চীনের ভূমিকায় বাড়ছে বৈশ্বিক রাজনৈতিক উত্তেজনা
বিশ্বমঞ্চে রাশিয়া ও চীনের ভূমিকা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। এই দুই পরাশক্তি আশাবাদী যে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া আধিপত্যের অবসান ঘটে এবং ইরান এগিয়ে যায় বিকল্প শক্তি হিসেবে। ইরানের প্রতি রাশিয়া ও চীনের সমর্থন শুধু সামরিক নয়, বরং কূটনৈতিক দিক থেকেও অনেকটা এগিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া ও চীন চাইছে মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ও রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে, যেখানে ইরান হবে কেন্দ্রবিন্দু। এর ফলে ইরান শুধু সামরিক দিক থেকে নয়, বরং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটেও নিজেদের ক্ষমতা বাড়িয়ে নিচ্ছে। গোটা বিশ্ব এই পরিবর্তনকে নজরে রাখছে এবং ইরানের মাধ্যমেই বদলে যাচ্ছে মেরুকরণ।
ইরানিয়ান সামরিক উপস্থাপনায় নতুন প্রমাণ
ইরানের সামরিক ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের একটি নির্দশন যেখানে দেখা যাচ্ছে তাদের ড্রোন ও অস্ত্র সজ্জিত করা হয়েছে এই প্রযুক্তি দিয়ে। এক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ইরানের সেনাবাহিনীর কাছে এমন কিছু গোপন অস্ত্র রয়েছে যেখানে সাধারণ আকারের অন্তরালে লুকিয়ে আছে উন্নত প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির ফলে ইরান নিজে থেকেই শত্রু শনাক্তসহ যুদ্ধ পরিকল্পনা তৈরি করতে সমর্থ।
এছাড়াও ইরান তার সাইবার যুদ্ধক্ষেত্রে প্রস্তুত এবং এর জন্য আলাদা একটি সাইবার ইউনিট গঠন করেছে। এই সাইবার ইউনিট যে কোন প্রতিপক্ষের সামরিক নেটওয়ার্ক বা গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সহজে হ্যাক করতে সক্ষম। এই বিবেচনায় ইরান শুধু মাটিতে নয়, বরং ভার্চুয়ালি যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত।
FAQs SECTION
- ইরানের সামরিক শক্তি কতখানি বৃদ্ধি পেয়েছে?
ইরান সামরিক ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নত, আর এখন তাদের কাছে এআই প্রযুক্তির ড্রোন ও উন্নত অস্ত্র রয়েছে যা তাদের বেশি ক্ষমতা দিয়েছে। - রাশিয়া এবং চীনের ইরানের প্রতি সমর্থন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
রাশিয়া এবং চীন ইরানকে সমর্থন দিচ্ছে যেন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙা যায়। এতে ইরানের কূটনৈতিক অবস্থান আরও মজবুত হয়েছে। - ইরানের সাইবার যুদ্ধ সক্ষমতা কতটা শক্তিশালী?
ইরানের সাইবার ইউনিট যে কোনো প্রতিপক্ষের সামরিক নেটওয়ার্ক বা গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সহজে হ্যাক করতে সক্ষম, যার ফলে তারা ভার্চুয়াল যুদ্ধেও প্রস্তুত।
- ইরানের পরমাণু কর্মসূচির আপডেট কি?
ইরান ৮৩.৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম, যা অনেকেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে মনে করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।