আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপ নয়- রাশিয়াই সেরা। ‘একাই একশ’ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রণাঙ্গনে রুশ গোলাবারুদে ঝলসে যাওয়া ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের মুখ দেখে সেই সুরই বাজছে রাশিয়ার ‘বিজয় বিউগলে’! ইউক্রেনে ‘বিষ ভোমরার’ পাল নিয়ে রাশিয়াকে ঠেসে ধরেছিল যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ-কূটনীতির ‘নীল ছোবলে’ অথর্ব করে করে দিতে চেয়েছিল বিশ্ব নেতৃত্বের অঘোষিত সম্রাট প্রেসিডেন্ট পুতিনকে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন অভিযান শুরুর দিন থেকেই এই ছকেই ঝাঁপিয়ে পড়ে পুরো মার্কিন বিশ্ব। কিন্তু বছর শেষে দেখা গেল- লাভের খাতায় শূন্য! ২০২৩ সালটাও বড় আশা নিয়ে শুরু করেছিল ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা দোসররা। কিন্তু এবারও হিসাবের খাতায় সেই আগের ‘অঙ্কই’- ব্যর্থতা!
ইউক্রেন রাশিয়ায় পালটা আক্রমণ শুরু করলেও এখন তা অনেকটাই দমে গেছে। বহুমুখী পালটা আক্রমণে কোনো অগ্রগতি আনতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি। এমনকি এখন যুদ্ধের ময়দানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংকটে পড়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রধান সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রও দেশটিকে সমর্থনে অর্থ সহায়তা দিতে পারছে না। ৬০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তার অনুরোধ কংগ্রেসে পাশ করা সম্ভব হয়নি। হাঙ্গেরি ইউক্রেনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবশেষ প্রস্তাবিত চুক্তি অবরোধ করে রেখেছে।
ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পুতিনকে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর আরেকটি সুযোগ করে দিয়েছে। ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ালেও শক্ত হাতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়েছেন তিনি। যুদ্ধ-সংঘাতে সময় পাড় করলেও রাশিয়ার শিল্প উৎপাদন ও জিডিপি বাড়ছে। রেকর্ড হারে কমেছে বেকারত্বের হার। ২০২৩ সালের শেষের দিকেই তা ২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
রাশিয়ায় আগামী ১৫ এপ্রিল নির্বাচনে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন পুতিন। তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নির্বাচনে তার জয়লাভ মোটামুটি নিশ্চিত।
ইতোমধ্যে ইউক্রেনের প্রায় ১৮ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন রুশ সেনারা। দারুণ চাঙা অবস্থায় থাকা পুতিন নতুন বছরে দেশটিতে হামলা আরও জোরদার করবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। পুতিনের আপাত লক্ষ্য, তাদের দখলে থাকা এসব অঞ্চলে রাশিয়ার অবস্থান আরও পোক্ত করা।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুতিন ধারণা করেন, তিনি একাই পুরো পশ্চিমা বিশ্বকে ‘নাকাল’ করে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন। ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর সাহায্য-সহযোগিতা যদি কমতে থাকে, তাহলে হয়তো একদিন তিনিই সত্য বলে প্রমাণিত হবেন।
পুতিনের জন্য ইরান ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দুই দেশই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের প্রধান শত্রু। আর সেই সুযোগটিই কাজে লাগিয়েছেন পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিদেশ থেকে রাশিয়া যেসব অস্ত্র ও সমরাস্ত্র প্রযুক্তি পেয়েছে, তা এ দুই দেশ থেকে এসেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।