আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া যখন ক্ষেপণাস্ত্র আর গোলা ছুড়ছে, সে মুহুর্তে ইউক্রেইনের পাল্টা উত্তরের মোক্ষম হাতিয়ারটি এসেছে সম্ভবত খুবই অপ্রত্যাশিত একটি সূত্র থেকে। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সহিংসতায় জড়িয়ে নয়, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আর নিপুণ কৌশল খাটিয়ে নানা বিবেচনায় বহিঃবিশ্ব থেকে রাশিয়াকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ইউক্রেইনের সেই শক্তি।
বলা হচ্ছে, ইউক্রেইনের ‘মিনিস্ট্রি অফ ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন’ বা ডিজিটাল রূপান্তর মন্ত্রণলয়ের কথা। রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে এক অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা দাঁড় করিয়েছে ইউক্রেইন সরকারের প্রযুক্তিভক্ত, তরুণ ও “ক্ষ্যাপাটে” কিছু মানুষ।
২৪ ফেব্রুয়ারি দিনের শুরুতে কিইভে যখন প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে তখন নিজের দুই মাস বয়সী সন্তানের জননী খাওয়াচ্ছিলেন ভ্যালেরিয়া আইওনেন। তার অন্য পরিচিয় তিনি ইউক্রেইনের ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী । “কী হচ্ছে প্রথমে বুঝতেই পারিনি,” বলেন আইওনেন। শীতল সত্যিটা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি তার, রাশিয়া ইউক্রেইনের ওপর চড়াও হয়েছে যুদ্ধসরঞ্জাম নিয়ে।
একসময় মার্কেটিং খাতে কাজ করতেন ৩১ বছর বয়সী আইওনেন, এমবিএ-ও করেছেন। রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হয়েছে বুঝতে পারার পর দ্রুত মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা করেন তিনি। ইউক্রেইন সরকারের এই বিভাগটির প্রায় সবাই বয়সে তরুণ এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও েএর সম্ভাবনা নিয়ে বেশ সমঝদার। মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৩১ বছর বয়সী মাইখাইলো ফেদোরভ, রাজনীতিতে আসার আগে একটি ডিজিটাল মার্কেটিং স্টার্টআপের উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। ইউক্রেইন সরকার এই মন্ত্রণালয়টির প্রতিষ্ঠা করেছিল সরকারি সেবাগুলোর আধুনিকায়ন এবং দেশের প্রযুক্তিখাতকে সামনে এগিয়ে নাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। সামরিক হামলার মুখে সেই মন্ত্রণালয়টিকে তৎপর হতে হয়েছে দেশের প্রতিরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে।
সেই তরুণ প্রযুক্তিভক্ত “ক্ষ্যাপা”দের উদ্যোগগুলোই রাশিয়ার বিপরীতে ইউক্রেইনের লড়াইয়ের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে, ইউক্রেইনের পক্ষে টেনেছে বিশ্বনেতা এবং প্রথমসারির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের। কিইভে প্রথম মিসাইল হামলার তিন দিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছিন্ন করতে চাপ দিতে অনলাইনে প্রচারণা শুরু করেন ফেদোরভ ও তার কর্মীরা। সামরিক বাহিনীর তহবিল জোগাড়ে অনুদান নেওয়া শুরু করেন ক্রিপ্টো মুদ্রার মাধ্যমে, ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড সেবার মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করেন তারা। এমনকি রাশিয়ার ওপর পাল্টা সাইবার চালানোর লক্ষ্য নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হ্যাকারদের নিয়ে ‘আইটি আর্মি’ গঠনের উদ্যোগটিও এসেছে ওই একই মন্ত্রণালয় থেকে।
সম্প্রতি, ইউক্রেইনের নাগরিকরা যেন রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর গতিবিধির ছবি বা ভিডিও নিজ দেশের সামরিক বাহিনীকে সহজে সরবরাহ করতে পারেন সে লক্ষ্যে একটি চ্যাটবটও চালু করেছে মন্ত্রণালয়টি। সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভাগটির পরামর্শক আন্তোন মেলনিকের বক্তব্য, “আমরা মিনিস্ট্রি অফ ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনকে পরিষ্কারভাবেই একটি সামরিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছি।”
জনসমক্ষেই অ্যাপল, গুগল এবং ফেইসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটাকে রাশিয়ায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ফেদোরভ। সেই আহ্বানে কাজ তো হয়েছেই, রাশিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রিত অ্যাকাউন্টের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
অন্যদিকে, ক্রিপ্টো মুদ্রার মাধ্যমে আসা অনুদানের আকার ১০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়েই। ইউক্রেইনে ইলন মাস্ক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট টার্মিনাল পাঠিয়েছেন অন্তত দুইবার। এই উদ্যোগগুলো থেকে ইউক্রেইনের ডিজিটাল মন্ত্রণলায় সাফল্য পেলেও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যদি দেশের অভ্যন্তরে অগ্রসর হতেই থাকে, তবে দিন শেষে কী আদৌ কোনো মূল্য থাকবে এই সাফল্যের?
কমেডিয়ান থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মাইখাইলো ফেদোরভের হাতে ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে। অনলাইনে জেলেনস্কির নির্বাচনী প্রচারণার পরিকল্পনা করে জয়ের পথ সহজ করে দিয়েছিলেন ফেদোরভ। ফেদোরভের ঘাড়েই দায়িত্ব বর্তেছিল জেলেনস্কির “স্টেট ইন এ স্মার্টফোন” ভাবনাকে বাস্তবায়নের। দেশের সব সরকারি সেবা সহজে অনলাইনে পাওয়া যাবে, এমনটাই ছিল সেই চেষ্টার মূল ভাবনা।
জেলেনস্কির ফেদোরভ নির্ভরতা নিয়ে ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির ‘ডিজিটাল মিডিয়া অ্যান্ড সোসাইটি’ সহযোগী অধ্যাপক তানিয়া লোকোটের মত, “সে (ফেদোরভ) একজন তরুণ টেকনোক্র্যাট। ডিজিটাল খাতের ব্যবসায়িক দিক থেকে এসেছিলেন তিনি। তাকে নিয়ে সন্দিহান ছিলেন অনেকেই। জেলেনস্কি যাদের নিয়োগ দিয়েছিলেন তাদের অনেকেরই সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল না।”
ইউক্রেইনের উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন ফেদোরভ। নিজের মন্ত্রণালয় সাজাতে দেশের তারূণ্যদীপ্ত প্রযুক্তি খাতের দিকেই নজর দিয়েছিলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়েছিলেন উদ্যোক্তা, অনলাইন মার্কের্টিং খাতের অভিজ্ঞ কর্মী, সামাজিক মাধ্যম বিশেষজ্ঞ এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের। ইউক্রেইন সরকারের অন্যান্য বিভাগগুলোর সঙ্গে যার কোনো মিলই নেই।
“কোনো বুড়ো মানুষ ছিল না সেখানে। তবে ব্যবসা খাতের অনেকে ছিল,” জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়টির উপদেষ্টাদের একজন ম্যাক্স সেমেনচুক।
সরকারি দপ্তরে একই রংয়ের হুডি পরে কাজ করতে আসা লোকগুলো ইউক্রেইন সরকারের ভেতরে “ক্ষ্যাপাটে” লোকের দল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়টির ‘ই-সার্ভিস ডেভেলপমেন্ট’ বিভাগের প্রধান মস্তিস্লাভ বানিক।
একটি স্টার্টআপ বা বড় আকারের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য হয়তো গতি আর ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ে উন্মত্ততা স্বাভাবিক মনে হতেই পারে। তবে, ইউক্রেইনের পুরনো ধাঁচের সরকারি আমলাতন্ত্রের জগতে এটি ছিল নতুন এক বিপ্লব।
যুদ্ধের আগ পর্যন্ত মন্ত্রণলয়টির সবচেয়ে আলোচিত কাজ ছিল ‘ডিয়া’ নামের একটি অ্যাপ। “স্টেট ইন এ স্মার্টফোন” ভাবনার বাস্তব প্রয়োগ ছিল অ্যাপটিতে; ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স হিসেবে কাজ করতো অ্যাপটি, এমনকি সহজে ট্রাফিক ফাইন পরিশোধের ফিচারও ছিল অ্যাপটিতে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের কাজের ধরন ও সময়, পাল্টে গেছে দুটোই। যুদ্ধের প্রথম ১৫ দিন আদতে একটা লম্বা দিন বলে মনে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন উপ-মন্ত্রী আইওনেন। প্রযুক্তিনির্ভর সরকার ব্যবস্থা গঠনের স্বপ্ন কার্যকর করতে যে রশদ জোগানো হয়েছিল তার সবই এখন পরিণত হয়েছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধের অস্ত্রে।
ওয়্যার্ড জানিয়েছে, কিইভে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পরপরই প্রথমসারির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছিন্ন করতে চাপ প্রয়োগের জন্য অনলাইনে প্রচারণার কাজ শুরু করেন মন্ত্রণালয়টির উপদেষ্টা মেলনিক। তার প্রথম অনুরোধটি ছিল অ্যাপলের উদ্দেশ্যে। অ্যাপল প্রধান টিম কুকের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠির একটি কপি পরে টুইট করেছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ফেদোরভ।
ইউক্রেইনের ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের প্রচারণা পশ্চিমা শক্তি এবং অন্যান্য দেশের সরকারের আরোপিত অবরোধ থেকে সৃষ্ট গতি এবং রাশিয়ার পশ্চিমা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিরোধী অবস্থানের পুরো সুযোগ নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক ‘আটলান্টিক কাউন্সিল’-এর জ্যেষ্ঠ কর্মী এমারসন ব্রুকিংয়ের মত– “বর্শার ধারালো আগাটি ছিল ফেদোরভ এবং ইউক্রেইনের কৌশল, সব চাপ গিয়ে একিভূত হয়েছে সেখানে।”
এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ায় নিজস্ব পণ্যের বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে অ্যাপল, ইউরোপের ব্যবহারকারীদের জন্য ফেইসবুকে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে মেটা, রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে আসা সকল টুইটে সতর্কতা বার্তা জুড়ে দিচ্ছে টুইটার।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়ায় ডিজিটাল লেনদেনে সেবা থেকে শুরু করে গেইম স্টুডিওর কর্মকাণ্ড বন্ধ করানোর ঘটনাগুলোকে ভূ-রাজনৈতিক কৌশল খাটিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাশিয়াকে ‘একঘরে’ করে দেওয়ার সমতূল্য বলে আখ্যা দিচ্ছেন অনেকে।
“এটাই তার লক্ষ্য ছিল,” বলেন ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বানিক। “ফেদোরভ বলেছিলেন, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়া ত্যাগ করাতে আমাদের সব কিছু করতে হবে।” মার্চ মাসেই প্রকাশিত এক ভিডিওতে, স্টারলিংকের স্যাটেলাইট টার্মিনালের সামনে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার তরুণ প্রযুক্তি কর্মীদের পুতিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন ফেদোরভ।
মন্ত্রণলয়ের অন্যরাও থেমে নেই। ‘ডিয়া’ অ্যাপটি নতুন কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলেছেন বাকিরা। সামরিক বাহিনীর জন্য অনুদান সংগ্রহ, চ্যাটবটের মাধ্যমে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর গতিবিধির ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ, যুদ্ধের ২৪ ঘণ্টার টেলিভিশন কাভারেজ এবং বিমান হামলা থেকে বাঁচতে বাঙ্কারে থাকা পরিবারের শিশুদের জন্য আলাদা ভিডিও চ্যানেল চালু করা হয়েছে অ্যাপটির মাধ্যমে।
রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার দুদিন পর ডেভেলপার, ডিজাইনার, ডিজিটাল মার্কেটার এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের “আইটি আর্মি”-তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান ফেদোরভ। সেই আইটি আর্মি সমন্বয়ের কাজ করা হচ্ছে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে। বলা হচ্ছে, তিন লাখের বেশি স্বেচ্ছাসেবক যোগ দিয়েছেন আইটি আর্মিতে। রাশিয়ার কোন সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের উপর সাইবার হামলা চালানো হবে তার আইপি অ্যাড্রেস এবং ওয়েবসাইটের ঠিকানা ওই টেলিগ্রাম চ্যানেলে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রতিদিন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে রাশিয়াপন্থী যে অ্যাকাউন্টগুলো যুদ্ধ নিয়ে ভুয়া তথ্যের প্রচারণা চালাচ্ছে সেগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত রিপোর্টও করছেন আইটি আর্মির সদস্যরা।
যুদ্ধের তিন দিনের মাথায় দেশের বিমানহামলা সতর্কতা বার্তা প্রচারের ব্যবস্থার ব্যপ্তি আরও বাড়াতে এগিয়ে আসে দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে দেশের ‘সিভিল ডিফেন্স ফোর্স’-এর যোগাযোগ করিয়ে দেন আইওনেন। এখন সামরিক রেডিওতে বিমান হামলার খবর এলে সাইরেন বাজানোর পাশাপাশি একটি ওয়েবপেইজে ট্যাপ করেন সাইরেনের অপারেটররা। ওই এক ট্যাপ থেকেই “এয়ার এলার্ট’ অ্যাপ ব্যবহারকারী ২০ লাখের বেশি ইউক্রেইনবাসীর কাছে পৌঁছে যাচ্ছে আসন্ন বিমান হামলার সতর্কতাবার্তা। ‘অ্যাজাক্স সিস্টেম’-এর একই ফিড ব্যবহার করে দেশের সকল অ্যান্ডয়েড ফোন ব্যবহারকারীরকে সতর্কতা বার্তা দিতে গুগলকেও সহযোগিতা করেছে মন্ত্রণালয়টি।
ইউক্রেইনের ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে একই সঙ্গে চমকপ্রদ এবং যৌক্তিক বলে আখ্যা দিয়েছে ওয়্যার্ড। ফেইসবুকের টানা দুই দশকের উপস্থিতি আর গেল কয়েক বছরের মহামারীর কারণে আধুনিক জীবনের একটা বড় অংশ হয়ে উঠেছে অনলাইনকেন্দ্রীক। এমন পরিস্থিতিতে একটি দেশ অনলাইনের অ্যাপ, ক্রাউডসোর্সিং এবং ‘সোশাল মিডিয়া গ্রোথ হ্যাকিং’ কৌশল ব্যবহার করে নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে চাইলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সরকারি সেবাগুলো অনলাইনে সরিয়ে নেওয়াও সে প্রক্রিয়ারই অংশ।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক লোকোটের মত, “তারা যেটা করছে সেটা কেবল গণযোগাযোগ প্রচারণা নয়, তারা বাস্তব ফল অর্জন করছে যেটা থেকে ইউক্রেইনের প্রতিরোধ চেষ্টা উপকৃত হচ্ছে এবং ইউক্রেইনের নাগরিকরা সহযোগিতা পাচ্ছেন।”
তবে ইউক্রেইনের ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের এই সাফল্য দিন শেষে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনে কী ভূমিকা রাখবে সে বিষয়টিও অনিশ্চিত। ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করলেও তীব্রতা বেড়েছে রাশিয়ার আক্রমণের। খাবার, পানি ও ওষুধের মতো জরুরী রসদ নিয়েও আছে টানাপোড়েন। ইউক্রেইনের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। তবে, ভবিষ্যতের যুদ্ধ-বিগ্রহের হিসাব-নিকাশ যে প্রযুক্তির প্রভাবে পাল্টে যাবে, দেশটির ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড যেন তারই প্রমাণ দিচ্ছে।
সূত্র: bangla.bdnews24
হিজাব পরায় ঢুকতে দেওয়া হলো না! ভারতীয় রেস্তরাঁ ‘বন্ধ’ করলো বাহরিন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।