জুমবাংলা ডেস্ক: শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় চোর শনাক্তের জন্য ফকিরের দেওয়া রুটি পড়া খেয়ে শওকত বেপারী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ ঘটনায় মান্নান হাওলাদার (৬০) নামের আরেক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল রবিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের কালু ব্যাপারী কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতে জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের কালু ব্যাপারী কান্দি এলাকার শওকত ব্যাপারী (৫৫) ও মান্নান হাওলাদারের (৬০) তিনটি গরু চুরি হয়। পরে গরুর মালিকরা চোর ধরার জন্য পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর জেলার টেকেরহাটের দিগনগর-নিশ্চিন্তাপুর এলাকার ইসরাফিল ফকিরের কাছে যান।
ইসরাফিল ফকির ২০ হাজার টাকার বিনিময় একটি ডিম ও দুই ধরনের আটা পড়ে দেন। এক ধরনের আটা দিয়ে রুটি তৈরি করে এলাকার মানুষকে খাওয়াতে বলেন তিনি। আরেক ধরনের আটার রুটি গরু মালিকদের খেতে বলেন।
রবিবার সকাল ৮টার দিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে শওকত ও মান্নানও রুটি খান। এর ২০ মিনিট পরেই শওকত শওকত ব্যাপারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তার পরিবারের লোকজন দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, মান্নান হাওলাদার রুটি খাওয়ার পরে ব্যক্তিগত কাজে শরীয়তপুর যাচ্ছিলেন। পথে প্রেমতলা নামক স্থানে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ভুক্তভোগী শওকতের পরিবার জানিয়েছে, এ বিষয়ে তারা এখনো থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। এলাকাবাসীর ধারণা, দুই ধরনের আটার মধ্যে যে আটার এলাকাবাসীকে খাওয়ানোর কথা ছিল, ভুলবশত তা গরুর মালিকপক্ষ খেয়ে ফেলেছে। রুটির মধ্যে বিষাক্ত কিছু মেশানো ছিল বলে ধারণা তাদের।
এ বিষয়ে জানতে ইসরাফিল ফকিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘তথাকথিত ফকিরি চিকিৎসা এটি একটি অপচিকিৎসা। এ ধরনের চিকিৎসার কোনো ভিত্তি নেই। এ ধরনের অপচিকিৎসা থেকে সবাইকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’
জাজিরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা কোনো অভিযোগ করেনি। তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে চেয়েছিল। আমরা লাশ ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেছি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদেন প্রাপ্তি সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল বলেন, ‘তথাকথিত ফকিরের রুটি পড়া খেয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এটির বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। এটি সম্পূর্ণ প্রতারণা। তবে ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তা চাইলে যথাযথ আইনি সহায়তা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।