লাইফস্টাইল ডেস্ক : গ্রীষ্মকাল দেশি ফলের ভরা মৌসুম। ইতোমধ্যেই বাজারে এসে গেছে নানা ধরনের দেশীয় ফল। আর যেসব ফল এই মুহূর্তে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে তার মধ্যে আম অন্যতম। আমকে বলা হয় ফলের রাজা। অনন্য স্বাদের পাশাপাশি পুষ্টিগুণেও আম বেশ সমৃদ্ধ ফল। তবে আমের রয়েছে আবার অসংখ্য জাত। আর জাতভেদে আমের স্বাদও ভিন্ন ভিন্ন হয়।
তাই আম কিনতে গেলেই বেশিরভাগ মানুষ দ্বিধায় থাকেন এই ভেবে যে, কোন জাতের আম স্বাদে সেরা? পাশাপাশি এই সন্দেহ থাকে যে, আমগুলো রাসায়নিক দিয়ে পাকানো নয়তো?
আপাতদৃষ্টিতে কোন জাতের আম স্বাদে সেরা সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। কারণ, একেকজনের স্বাদের অনুভূতি একেক রকম। যেটির স্বাদ আপনার কাছে সবচেয়ে সেরা, সেটি হয়তো অন্য কারো পছন্দের স্বাদের তালিকায় দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থানেও থাকতে পারে।
তবে স্বাদের ক্ষেত্রে সেরা নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কোনটি কোন জাতের আম এবং সেটি পরিপক্ব কি-না তা কিছু বিষয় দেখা সহজেই চেনা যায়।
চলুন, অধিকাংশ মানুষের পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থাকা সুস্বাদু ১০ জাতের আম চেনার উপায় সম্পর্কে জেনেও নেওয়া যাক-
গোপালভোগ
সাধারণত মৌসুমে সবার আগে আসে গোপালভোগ জাতের আম। গোপালভোগ আম মাঝারি আকারের, এই আমের নিচের দিকে একটু সরু। এই জাতের পরিপক্ব আমের গায়ে সাধারণত হালকা হলুদ ছোপ ছোপ থাকে। পাকা আমের রং হলুদাভ সবুজ। এই আমের আঁটি পাতলা, আঁশ নেই ও মিষ্টি। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে গোপালভোগ আম পাকা শুরু হয়।
হিমসাগর
গোপালভোগের পর বাজারে ওঠে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি জাতের আম। এ আমের গড়ন বুকের দিকটা গোলাকার এবং অবতল থেকে সামান্য লম্বাটে আকার নিয়ে শীর্ষদেশ গোলাকৃতির হয়ে থাকে। এ জাতের আমও পাকলে হলুদাভ সবুজ হয়, কখনো কখনো ময়লা হলুদ হয়। মাঝারি আকারের এই আমের কমলা শাঁস খুব মিষ্টি ও সুঘ্রাণযুক্ত। হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি আম বাজারে পাওয়া যায় মে মাসের শেষে অথবা জুনের প্রথম দিকে।
হিমসাগর
উৎকৃষ্ট স্বাদের সুগন্ধযুক্ত জাতের আমের মধ্যে হিমসাগরের অবস্থান প্রায় শীর্ষে। হিমসাগর আম জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকতে শুরু করে এবং পুরো জুন মাস বাজারে পাওয়া যায়। এ আমের ঠোঁট নেই, গড়ন বুকের দিকটা গোলাকার এবং অবতল থেকে সামান্য লম্বাটে আকার নিয়ে শীর্ষদেশ গোলাকৃতির হয়ে থাকে। পরিপক্ক হিমসাগর আমের রং হালকা সবুজ। পাকার পরেও সবুজ থেকে যায়। ত্বক মসৃণ, খোসা পাতলা।
ল্যাংড়া
এরপর বাজারে ওঠে ল্যাংড়া আম। ল্যাংড়া আম অনেকটা গোলকার ও মসৃণ। এর নাক নিচের দিকে থাকে। হালকা সবুজ রঙের খোসা, পাকলেও হলুদ হয় না। এর খোসা পাতলা, হলুদ শাঁস, ভালোভাবে না পাকলে আম খেলে মুখ চুলকাতে পারে। সুঘ্রাণের ল্যাংড়া আমের সুখ্যাতি রয়েছে। সাধারণত ৬ জুন থেকে পাকতে শুরু করে ল্যাংড়া আম।
লক্ষণভোগ
ল্যাংড়া আমের পাশাপাশি একই সময় সময় লক্ষ্মণভোগ বা লখনা আমও পাওয়া যায়। লক্ষণভোগ চেনার সহজ উপায় হলো, এর নাক মাঝামাঝি স্থানে। পাকলে এ জাতের আম উজ্জ্বল হলুদ হয় এবং বোঁটার কাছে লালাভ রং ধরে। এই আমের ঘ্রাণ বেশ ভালো, তবে মিষ্টি কিছুটা কম।
হাঁড়িভাঙা
এরপর বাজারে ওঠে হাঁড়িভাঙা আম। এ আমের উপরিভাগ তুলনামূলক বেশি মোটা ও চওড়া এবং নিচের অংশ অপেক্ষকৃত চিকন। এ আম মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা। অনেক ক্ষেত্রে চামড়া কুঁচকে গেলেও এই আম পঁচে না। সাধারণত ১০ জুন থেকে পাকতে শুরু করে হাঁড়িভাঙা।
আম্রপালি
আম্রপালি আমের খোসা মসৃণ বা তেলতেলে। আম্রপালি নিচের দিকে খানিকটা সুঁচালো এবং উপরে একটু গোলাকৃতির হয় ছোট থেকে মাঝারি আকারের পাকা আম হলুদাভ সবুজ। শাঁস কমলা ও অনেক মিষ্টি। পাকা আম্রপালি আম বেশ কয়েক দিন ঘরে রাখা যায়। ২০ জুনের পর থেকে ভালোভাবে পাকা আম্রপালি আম পাওয়া যায়।
আশ্বিনা ও ফজলি
আশ্বিনা আর ফজলি আম দেখতে একই রকম। আকৃতিও বেশ বড়। তবে আশ্বিনা আম একটু বেশি সবুজ ও ফজলি আম খানিকটা হলুদ হয়। আশ্বিনার পেট মোটা হয় ও ফজলি দেখতে লম্বা ধরনের হয়। আশ্বিনা কালচে সবুজ রঙের আর ফজলি আম সবুজ রঙের। আশ্বিনা আমের স্বাদ টক-মিষ্টি। অন্যদিকে, ফজলি টকগন্ধযুক্ত মিষ্টি স্বাদের।
কাটিমন
পুষ্টিগুণ এবং স্বাদের কারণে বিশ্বজুড়ে আম বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও বারোমাসি আমের বাণিজ্যিক চাষের দিকে ঝুঁকুছেন দেশের চাষিরা। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই আম পাওয়া যায়। পাকা কাটিমন হলুদ সুঘ্রাণযুক্ত মিষ্টি। কাটিমন আম দেখতে সাধারণত লম্বাটে আকারের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।