জুমবাংলা ডেস্ক : ভৈরবে বাণিজ্যিকভাবে দুম্বা ও ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বিদেশ ফেরত মো. সবুজ ভূঁইয়া নামে এক যুবক। তিনি উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের আব্দুস সালাম মিয়ার ছেলে। মো. সবুজ ভূঁইয়া গত তিন বছর আগে সৌদি থেকে দেশে ফিরে আসেন। সেখানে দুম্বার লালন-পালন দেখে তার ইচ্ছা ছিল তিনি দেশে এসে বাণিজ্যিকভাবে দুম্বা পালন করবেন। দেশে এসে তাই করলেন। তিনি এখন একজন সফল খামারি। টার্কি জাতের এ দুম্বা বিক্রি করে মো. সবুজ ভূঁইয়ার আয় মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। মো. সবুজ ভূঁইয়া ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বেচাকেনা করায় ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। তার এই এ খামার দেখে দুম্বা পালনে আগ্রহ বাড়ছে অনেকেরই। দুম্বা পালনে খামারিকে সার্বিক পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস।
উদ্যোক্তা মো. সবুজ ভূঁইয়া অনলাইনের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এ দুম্বা বিক্রি করে যাচ্ছেন। সরকারি পৃষ্টপোষকতায় আরও বড় পরিসরে দুম্বার ফার্ম করতে চান এই উদ্যোক্তা।
এ ব্যাপারে উদ্যোক্তা মো. সবুজ ভূঁইয়া বলেন, ঢাকার একটি খামার থেকে টার্কি জাতের দেড়- দু’মাস বয়সী দুম্বার ৩টি বাচ্চা এনে লালন-পালন শুরু করি। বাচ্চাগুলোর ৭ থেকে ৮ মাস বয়স হতেই প্রজনন শুরু করে। বর্তমানে খামারে ২০টিরও বেশি দুম্বা রয়েছে। আগামী কোরবানি ঈদের আগে আমি খামারে শতাধিক দুম্বা সংরক্ষণ করবো ও কোরবানি ঈদের হাটে বিক্রির জন্য উপযোগী করে তুলবো। আমার খাবারের একেকটি দুম্বা বিক্রি করছি ১ থেকে দেড় লাখ টাকায়। গত তিন বছরে অর্ধশতাধিক দুম্বা বিক্রি করেছেন। দুম্বার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় দুম্বা পালনের তেমন বেগ পেতে হয় না। দুম্বার পাশাপাশি আমার ছাগলেরও খামার রয়েছে। এ খামারে আফ্রিকান বোয়ার, তোতাপুরিসহ বিভিন্ন প্রজাতির বেশকিছু ছাগল রয়েছে।
খামারি মো. সবুজ ভূঁইয়া আরও বলেন, দুম্বা বাংলাদেশে একটি লাভজনক পেশা। বাংলাদেশে দুম্বার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দুম্বা সাধারণত পাকচং ঘাষ আর ভূষি খেয়ে থাকে। দুম্বা ১৪ থেকে ১৫ মাসে দু’বার বাচ্চা দেয়। বাচ্চা দুধ ছাড়ার পর ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। মূলত আমাদের ‘গটফার্ম’ ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমেই বেচা-বিক্রি হয়ে থাকে। বিক্রিতগুলো ক্রেতাদের ঠিকানা মতো পাঠিয়ে দিই। আবার অনেকে নিজে এসেও নিয়ে যান। বাণিজ্যিক ভাবে দুম্বার খামার করে আমাদের অনেক ভালো আয় হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলেন, আগে আমরা দুম্বার নাম শুনেছি, চোখে দেখিনি। তার এই খামারে এসে এখন তা দেখতে পাচ্ছি। বিভিন্ন সময়ে লোকজন এসে এখান থেকে দুম্বা কিনে নিয়ে যায়। তার এই সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই দুম্বার খামার দিতে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। প্রতিদিন অনেক লোকজন আসে তার এই খামার দেখতে।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাইফুল আজম বলেন, ‘সবুজের এই দুম্বার খামার প্রান্তিক খামারিদের জন্য অনুকরণীয় একটি বিষয়। তার সাফল্য অন্যদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। দুম্বার প্রধান খাবার ঘাস। দুম্বা সাধারণত কৃমি ছাড়া অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত হয় না। উৎপাদন খরচ খুবই কম। ফলে দুম্বার খামার অতি লাভজনক।’ উপজেলার সফল খামারি সবুজকে সব রকমের সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে জানিয়ে প্রাণিসম্পদ অফিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্য যে কেউ দুম্বার খামার করলে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করে যাবো।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।