জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে চাহিদার প্রায় পুরো চিনিই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, এটি সাদা চিনি নামে পরিচিত। অন্যদিকে দেশে আখ থেকে সামান্য পরিমাণ চিনি উৎপাদন করে সরকার, যা চাহিদার প্রায় দেড় শতাংশ। সরকার উৎপাদিত এই চিনির নামেই ভেজাল করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। আবার তা অন্যান্য চিনির চেয়ে বেশি দামে বিক্রিও হচ্ছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের বিভিন্ন মুদি দোকানে এসব চিনি বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকার বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) মাধ্যমে দেশের ৯টি কারখানা চিনি উৎপাদন করে। এই চিনির কিছু অংশ ডিলারদের মাধ্যমে খোলাবাজারেও বিক্রি হয়। আর বাকিটা রেশনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীদের দেওয়া হয়। খোলাবাজারে বিক্রি করা এই চিনি মূলত লাল চিনি নামে পরিচিত।
এই চিনির চাহিদা বেশি। ফলে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বিএসএফআইসির প্যাকেট নকল করে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছেন। কেউ কেউ আবার সাদা চিনিতে রং মিশিয়ে কিছুটা লাল করে বাজারে চড়া দামে বেচছেন।
অথচ নকল প্যাকেটে প্রতি কেজির দাম দেওয়া আছে ১৭০-১৮০ টাকা। বাজারে এই নকল চিনির পরিমাণ কম হলেও তা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চোখ এড়াতে পারেনি। এই নকল চিনির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডলকে অভিযান চালাতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত দুটি দোকানে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল লাল চিনি। একজন বিক্রেতা নিজেই বলে দিলেন, কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সাদা চিনিতে রং মিশিয়ে বেচা হয়।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের ৭৩ নং দোকান মায়ের দোয়া স্টোরে গিয়ে দেখা যায়, আখের চিনি নামে এই রং মেশানো নকল লাল চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। উৎপাদন তারিখ দেওয়া আছে ১ জুন ২০২৪ সাল। আর মেয়াদ শেষের তারিখ দেওয়া আছে ৩১ মার্চ ২০২৫ সাল। অথচ এই সময়ে বিএসএফআইসি কোনো চিনিই উৎপাদন করে না। প্যাকেটের গায়ে দাম দেওয়া আছে ১৭০ টাকা, যা সরকারি দরের চেয়ে বেশি।
পরিচয় গোপন করে ওই দোকানে ক্রেতা হিসেবে যান এই প্রতিবেদক। দোকানের বিক্রয়কর্মী হৃদয় বলেন, মার্কেটের তৃতীয়তলায় এই চিনির প্যাকেট হয়। লুকিয়ে বিক্রি করা লাগে। ১৭০ টাকা কেজিতে সিল মারা হয়। এই চিনির দানা মোটা। খাবারের রং দিয়ে লাল করা হয়। গায়ের রেট যেটার ১৪০ টাকা, সেটা আসল চিনি। কিন্তু যেটার ১৭০-১৮০ টাকা সেটা ভেজাল।
এই কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের ৬১ নং দোকানের নাম মেসার্স হামিদ স্টোর। এই দোকানে গিয়ে দেখা যায় বিএসএফআইসির ডিজাইন করা প্যাকেটে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। অথচ এত দাম দিয়ে বিএসএফআইসি কোনো প্যাকেটই করে না।
এসব ভেজাল, প্যাকেট নকল করা ও দাম বেশি রাখা নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, অধিদপ্তরে নতুন যোগ দিয়েছি। চিনির প্যাকেট নকল করে বেশি দামে বেচা সম্পর্কে আমি জানতাম না। এর বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএসএফআইসির সচিব মো. আনোয়ার কবীর বলেন, আমরা কিছু চিনি দিই ডিপার্টমেন্ট শপে। সপ্তাহে দু-তিন দিন আমাদের অফিসের নিচে বেচি। ডিলারদের বস্তার চিনি দেওয়া হয়। তাদেরকে এটা খোলা অবস্থায়ই বেচতে হয়। প্যাকেজিং করতে পারবে না। এটা আমাদের নিজস্ব পণ্য। অন্য কেউ প্যাকেজিং করলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।