জুমবাংলা ডেস্ক : এক লিটার দুধের দাম মাত্র ১০ টাকা! অবিশ্বাস্য মনে হলেও রমজানে ১০ টাকা লিটারে নিজের খামারের গরুর খাঁটি দুধ বিক্রি করছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো. এরশাদ উদ্দিন। নামমাত্র মূল্যে দুধ পানের সুযোগ পেয়ে খুশি এলাকার মানুষ।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রমজানের প্রথম দিন সকালে এরশাদের খামারে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার দরিদ্র মানুষ প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন ব্যাগ, জগ, মগসহ নানা পাত্র নিয়ে অপেক্ষা করছেন দুধের জন্য। বাজারে যেখানে গরুর দুধ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা লিটার। সেখানে খামারে উৎপাদিত এক লিটার খাঁটি দুধ মিলছে মাত্র ১০ টাকায়। তাইতো নামমাত্র টাকায় দুধ কিনতে এরশাদ উদ্দিনের খামারে মানুষ ভিড় করছেন।
খামারের কর্মচারীরা জানান, এক লিটার কিংবা দুই লিটার নয়। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে দরিদ্র মানুষের মধ্যে রোজার প্রথম দিন থেকে নামমাত্র মূল্যে দুই হাজার লিটার দুধ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মো. এরশাদ উদ্দিন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে চড়ামূল্যে দুধ কেনা দরিদ্র মানুষের পক্ষে কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। তাই কম দামে দুধ পেরে খুশি এলাকার মানুষ। প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। তবে কারও কাছে টাকা না থাকলে তাকেও ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না।
দুধ নিতে আসা নিয়ামতপুর ইউনিয়নের লোহা গ্রামের গৃহবধূ মারজিয়া আক্তার বলেন, রমজানে দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। এর মধ্যে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় লিটার দুধ কেনা আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব না। ১০ টাকা লিটারে দুধ কেনার সুযোগ করে দেয়ায় আমরা দুধ খেয়ে রোজা রাখতে পারছি।
পার্শ্ববর্তী নাহিরাজপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন, গত তিন বছর ধরে রোজার সময় এখান থেকে ১০ টাকা কইরা দুধ কিনছি। সকালে আসছি ১০ টাকা দিয়া এক লিটার দুধ কিনতে। এ ছাড়া বাজার থেকে দুধ কিনে খাওয়া সম্ভব হবে না।
জেসি অ্যাগ্রো লিমিটেডের মালিক ও বাংলাদেশ মিলসস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এরশাদ উদ্দিন গত তিন বছর ধরে রোজার মাসে এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে কম মূল্যে দুধ বিক্রি করছেন। তার খামারে ৩০টি গাভীর মধ্যে প্রতিদিন ২০টি গাভী থেকে ৬৫ থেকে ৭০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। প্রতিদিন ৭০/৮০ জনকে ১ লিটার করে দুধ দেয়া বলে জানান খামার সংশ্লিষ্টরা।
মাহে রমজানে দরিদ্র মানুষকে দুধ খাওয়ার সুযোগ দিতেই এমন উদ্যোগ বলে জানালেন এরশাদ উদ্দিন। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব দুধ এভাবেই খামার থেকে বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।
এরশাদ বলেন, এবার নিয়ে চার বছর ধরে প্রতি রমজান মাসে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ১০ টাকা করে গাভীর দুধ দেয়া হচ্ছে। আগামী বছর গাভীর সংখ্যা বাড়িয়ে আরও বেশি মানুষকে দুধ দেয়া হবে বলে জানান তিনি। তার খামারে ৩০টি গাভী ছাড়াও মোটাতাজা করা হচ্ছে ২৫০টি ষাঁড়। প্রতি বছর তার খামার থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার কোরবানির পশু বিক্রি হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।