জুমবাংলা ডেস্ক: রবিবার দুপুর। ঢাকার গণভবন থেকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইনসের সিভিক সেন্টারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুনছেন এক গৃহহীন নারীর কথা। সেলিনা আকতার নামে ওই নারী মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি ঘর উপহার পেয়েছেন।
তিনি কথা বলার সময় কাঁদছিলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর চোখের কোণে জমে জল। মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি। এ যেন বাবার জন্মশতবার্ষিকীতে গৃহহীন নারীকে ঘর দিতে পারার আনন্দ। সেলিনার বক্তব্য চট্টগ্রাম প্রান্তে উপস্থিত দর্শকের হূদয়ও ছুঁয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার পর ঘর পাওয়া নারীদের অনুভূতি জানতে চান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন অবহিত করেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১৪টি থানার প্রতিটি থানার একজন নারী একটি করে বাড়ি পেয়েছেন। তাঁরা সবাই উপস্থিত আছেন। তাঁদের একজন অনুভূতি ব্যক্ত করছেন।
এর পরই মাইক্রোফোন হাতে কথা বলা শুরু করেন হাটহাজারীর গুমানমর্দন এলাকার বাসিন্দা সেলিনা আকতার। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ বছর আগে আমার স্বামী আমাদের ছেড়ে চলে যান। আমার চার মেয়ে নিয়ে আমি অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছি। এমন দিনও গেছে আমরা না খেয়ে থেকেছি। আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। মুজিবর্ষে আমি একটি ঘর পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশ দিয়েছেন। আপনার নির্দেশে পুলিশ ঘর দিয়েছে। আমি সুন্দর বাড়ি পেয়েছি। ’ তিনি বলেন, ‘আমি দুশ্চিন্তায় ছিলাম, আমার চার মেয়ে বড় হচ্ছে। তাদের কোথায় কিভাবে রাখব। এখন পুলিশ বাড়ি করে দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ। আল্লাহ যেন তাদের ভালো রাখে। আপনিও ভালো থাকবেন। ’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তব্য শেষ করার পর থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক এবং গৃহহীনদের ঘর উপহার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সার্ভিস ডেস্কে কর্মরত নারী পুলিশ সদস্যদের কথা শুনতে চান। প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে উপপরিদর্শক নাজনুন নাহার স্বপ্না সার্ভিস ডেস্কের কার্যক্রম বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী সার্ভিস ডেস্কে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন তাঁর বক্তব্যে।
স্বপ্নার বক্তব্যের পর অনুভূতি ব্যক্ত করেন সার্ভিস ডেস্ক থেকে সেবাগ্রহীতা নারী বৃষ্টি রানী শীল। তিনি বলেন, ‘আমার কোর্ট ম্যারেজ (বিয়ে) হয়েছিল, কিন্তু পরে স্বামীর পরিবার বিয়ে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চন্দনাইশ থানায় যাই। ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই দুই পরিবারকে ডেকে মীমাংসা করে দেয় পুলিশ। আমি এখন ভালো আছি। ’
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মঈনুর রহমান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এখানে যাঁরা হূদয়ভাঙা বক্তব্য দিয়েছেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) পক্ষ থেকে বাংলাদেশ পুলিশ তাঁদের জন্য আরো কিছু করার চেষ্টা করব। ’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।