বিনোদন ডেস্ক : সালমান খানের জীবনে কত নারীই তো এসেছেন। তাঁদের অনেকের সঙ্গেই বলিউডের ‘ভাইজান’ সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলেও শোনা গিয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে কেউ সালমানকে বিয়ে করতে এ দেশে চলে এসেছিলেন কি? নাহ্! এখনও পর্যন্ত তেমনটা শোনা যায়নি। তবে সালমানের প্রাক্তন ‘প্রেমিকা’ সোমি আলি নাকি তেমনই করছিলেন। অন্তত সংবাদমাধ্যমের কাছে তেমনই দাবি এককালে বলিউডের এই নায়িকার।
নব্বইয়ের দশকে হাতেগোনা কয়েকটি ফিল্মে নায়িকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল আদতে পাকিস্তানের বাসিন্দা সোমিকে। তবে এককালের এই নায়িকা এখন নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নারী অধিকারের লড়াইতে শামিল। ধর্ষণ বা গার্হস্থ্য হিংসার মতো অপরাধের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন তিনি।
নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বলিউডে। মাত্র বছর পাঁচেক কাজ করেছিলেন। তবে নিজের কেরিয়ারের থেকেও এক সময় বোধহয় সালমানের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে শিরোনামে থেকেছেন তিনি।
তখনও স্কুলের গণ্ডি পার হননি। এমনকি সালমানকে সামনাসামনিও দেখেননি। সে সময় থেকেই নাকি তাঁর প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন সোমি। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘পরিবার আর সকলের মতো আমিও হিন্দি ফিল্মের পোকা ছিলাম। স্কুলে পড়ার সময় সালমান খানের ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ দেখেছিলাম।’’
সুরজ বরজাতিয়ার ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-তে ভাগ্যশ্রীকে পাশে পেয়েছিলেন সালমান। ১৯৮৯ সালে সেই ফিল্মের পর নিজের ভাগ্যকে যেন হাতের মুঠোয় পুরে ফেলেছিলেন সালমান। ওই ফিল্ম মুক্তির আগেই অবশ্য ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’-তে পার্শ্বচরিত্রে দেখা গিয়েছে সল্লু মিয়াঁকে। তবে নায়ক হিসেবে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-ই সালমানের প্রথম ফিল্ম!
সুরজের ফিল্মের পর প্রায় তিন দশক কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে বলিউডে তিনি নিজেই একটি ব্র্যান্ড— সালমান। তিরিশ বছরে নিজের ফিল্ম ছাড়াও একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন সেলিম খানের ছেলে।
সোমি আলি ছাড়াও সালমান সঙ্গে নাম জড়িয়েছে সঙ্গীত বিজলানি, ফারিয়া আলম, ঐশ্বর্যা রাই, ক্যাটরিনা কইফ থেকে শুরু করে য়ুলিয়া ভান্টুরের সঙ্গে।
তবে সালমানের কোনও ‘প্রেমিকা’ কি তাঁকে বিয়ে করার জন্য নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে এ দেশে এসেছেন? এককালে আমেরিকার ফ্লোরিডায় থাকতেন সোমি। তবে শুধুমাত্র সালমানকে বিয়ে করবেন বলে নাকি ফ্লোরিডা ছেড়ে এ দেশে চলে এসেছিলেন কিশোরী সোমি।
ওই ঘটনার পর দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। এত দিন পর সে ঘটনার কথা খোলসা করেছেন সোমি। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ‘‘ ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ দেখার পর থেকেই সালমানের উপর গভীর টান জন্মেছিল। এক রাতে তো ওঁকে স্বপ্নেও দেখেছিলাম। তখনই ঠিক করি যে সালমানকে বিয়ে করতে হবে। সে জন্য ভারতে যাব!’’ তখন সোমির বয়স মাত্র ১৬।
করাচির বাড়িতে ১২ বয়স পর্যন্ত বসবাস ছিল সোমির। তার পর ফ্লোরিডায় থাকতে শুরু করেন তাঁরা। তবে সালমানের প্রেমে মজে সে বাড়ি ছাড়ার জন্য মায়ের কাছে কাকুতিমিনতি করতে থাকেন সোমি। শেষমেশ ভারতেও চলে আসেন তিনি। যাওয়ার আগে মা’কে বলেছিলেন, ‘‘সালমানকে বিয়ে করতে মুম্বই যাচ্ছি!’’
সালমানকে বিয়ের সিদ্ধান্তের পিছনে যে ওপরওয়ালার হাত রয়েছে, তেমনই মনে করতেন সোমি। তাঁর কথায়, ‘‘সালমানকে স্বপ্নে দেখার পর ওঁকে বিয়ের করব বলে স্থির করেছিলাম। মনে হয়েছিল, এ ঈশ্বরিক আদেশ।’’
এক সময় সব ছেড়ে এ দেশে চলে আসেন সোমি। সালমানের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর নিজের স্বপ্নের কথা তাঁকে জানিয়েও ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নেপালের পথে রওনা দিয়েছিলাম। সে সময় আমার পাশেই বসেছিলেন সালমান। ওঁর একটা ছবি দেখিয়ে বলেছিলাম, ‘তোমাকে বিয়ে করতেই এত দূর থেকে এ দেশে এসেছি!’ এ কথায় সালমানের মন্তব্য ছিল, ‘আমার গার্লফ্রেন্ড রয়েছে।’ ’’ বান্ধবী থাকলেও যে তা পরোয়া করেন না, সে কথা সালমানকে জানিয়েছিলেন সোমি।
সোমি জানিয়েছেন, নেপালে তাঁদের ওই কথোপকথনের বছরখানেক পর সালমানের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রপাত। সালটা ১৯৯১। সে সময় সোমির বয়স মাত্র ১৭। নিজের থেকে প্রায় আট বছরের বড় সালমানের সঙ্গে সোমির ‘সম্পর্ক’ টিকেছিল ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত।
সালমানই নাকি সোমির প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা প্রথমে মুখ ফুটে স্বীকার করেন। সোমি বলেন, ‘‘আমাকে প্রথমে ‘আই লভ ইউ’ বলেছিল সালমানই। ব্যস্! তাতেই কাজ হয়েছিল। বিশেষ বোঝাতে হয়নি।’’
একটানা আট বছরের ‘সম্পর্ক’ সত্ত্বেও এক সময় বিচ্ছেদ আসে সোমির জীবনে। সোমির কথায়, ‘‘এখন মনে হয়, সালমানকে বিয়ে করার জন্য ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে যাওয়াটা কী বোকামিই ছিল! তখন আমি মাত্র ১৬ বছরের… ’’
সালমানের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ ভেঙে গেলেও তাঁকে নিয়ে কুৎসা করেননি সোমি। বরং সালমান ও তাঁর পরিবারের থেকে অনেক কিছু শিখেছেন বলেই জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সালমানের মা-বাবা এবং ওঁর পরিবারের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। সালমানের সম্পর্কেও একই কথা বলব। তা ছাড়া, কোনও সম্পর্কে সুখী না হলে তা ছেড়ে বেরিয়ে আসাই উচিত। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছিল। এর পর এক সময় আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি!’’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।