ধর্ম ডেস্ক : দুনিয়ার শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। ইনসাফ বা ন্যায়পরায়ণতা না থাকলে জীবনের শৃঙ্খলা বাধাগ্রস্ত হয়। মানুষের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে অশান্তি সৃষ্টি হয়। পরস্পর শত্রুতা সৃষ্টি হয়।
‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর জন্য ন্যায়ের সঙ্গে সাক্ষ্যদানকারী হিসেবে সদা দণ্ডায়মান হও। কোনো কওমের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদের কোনোভাবে প্ররোচিত না করে যে তোমরা ইনসাফ করবে না।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৮)
অনেকে আছে তাদের জুলুমগুলোকেই ইনসাফ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিভিন্ন রকম ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন মিথ্যা গল্প সাজায়।
‘হে মুমিনগণ, তোমরা ন্যায়ের ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর জন্য সাক্ষীরূপে। যদিও তা তোমাদের নিজেদের কিংবা মা-বাবার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে হয়।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৩৫)
আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) এমন একটি ইনসাফভিত্তিক সমাজ চেয়েছেন, যেখানে ধনী-গরিব, শক্তিশালী-দুর্বল সবার প্রাপ্য অধিকার থাকবে। যেখানে কেউ কারো প্রতি জুলুম করবে না। কেউ কারো হক মেরে খাবে না। দুর্বল তার প্রাপ্য আদায়ের জন্য কখনো জোর-জবরদস্তি করতে হবে না।
আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, এক বেদুইন নবী (সা.)-এর কাছে এসে তাঁর ঋণ শোধের জন্য তাঁকে কঠোর ভাষায় তাগাদা দিল, এমনকি সে তাকে বলল, আমার ঋণ পরিশোধ না করলে আমি আপনাকে নাজেহাল করব। সাহাবিরা তার ওপর চড়াও হতে উদ্যত হয়ে বললেন, তোমার অনিষ্ট হোক! তুমি কি জানো কার সঙ্গে কথা বলছ? সে বলল, আমি আমার পাওনা দাবি করছি। তখন নবী (সা.) বলেন, তোমরা কেন পাওনাদারের পক্ষ নিলে না? অতঃপর তিনি কায়েসের কন্যা খাওলা (রা.) -এর কাছে লোক পাঠিয়ে তাকে বললেন, তোমার কাছে খেজুর থাকলে আমাকে ধার দাও। আমার খেজুর এলে তোমার ধার পরিশোধ করব।
খাওলা (রা.) বললেন, হ্যাঁ, আমার পিতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক, ইয়া রাসুলাল্লাহ। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাঁকে ধার দিলেন। তিনি বেদুইনের পাওনা পরিশোধ করলেন এবং তাকে আহার করালেন। তিনি বলেন, উত্তম লোকেরা এমনই হয়। যে জাতির দুর্বল লোকেরা জোর-জবরদস্তি ছাড়া তাদের পাওনা আদায় করতে পারে না, সেই জাতি কখনো পবিত্র হতে পারে না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪২৬)
মাইমুনা আক্তার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।