আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিদ্যুৎ, জ্বালানির ভয়াবহ সংকট ও খাদ্য-ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল অবস্থা শ্রীলঙ্কায়। ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়েছে দেশটি। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশটির ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রয়োজন। এই অর্থ দিয়ে জ্বালানি ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের গতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে বলে শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী। খবর রয়টার্স’র।
২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থান দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ওষুধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠছে। বিভিন্ন স্থানে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলছে।
চলতি সপ্তাহে নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আলি সাবরি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া তার প্রথম সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, এটি একটি কঠিন কাজ। চলতি মাসেই আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক বন্ড পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছে শ্রীলঙ্কা। এছাড়া অর্থপ্রদানের উপর একটি স্থগিতাদেশ চাইবে দেশটি এবং জুলাই মাসে আসন্ন ১০০ কোটি ডলার অর্থপ্রদানের জন্য বন্ডহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়েও আত্মবিশ্বাসী তারা।
দেশটির সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বিশ্ব ব্যাংক এবং চীন, যুক্তরাষ্ট্র, বিট্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অংশীদার দেশগুলোর কাছেও সহায়তা চাইবে বলে জানানো হয়েছে।
আলি সাবরি বলেন, আমরা জানি যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র উপায় লড়াই করে যাওয়া। আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।
শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। দেশটিতে মার্চে খাবারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেই। পর্যটনখাতের ওপর নির্ভরশীল দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।
ভারত, চীন ও বাংলাদেশ থেকে ঋণ নিয়েছে নগদ অর্থ সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা। এছাড়া ২০২১ সালের জুনে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা চীনের কাছে ঋণ পুনর্নির্ধারণের আবেদন জানায়। ফেব্রুয়ারিতে দেশটি ভারতের কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে তেল কেনার জন্য। তাছাড়া ৮ মার্চ ভারত শ্রীলঙ্কাকে আরও একশ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেয়। এদিকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল মাত্র ২৩১ কোটি ডলার।
চলতি বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কায় খাবারে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ২ শতাংশে। ২০১৯ সালে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল এক দশমিক চার শতাংশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।